সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা-দেশে প্রথমবারের মতো মাছের বানিজ্যিক ভ্যাক্সিন উদ্ভাবন

Category: গবেষণা ফিচার Written by agrilife24

খসরু মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন, সিকৃবিঃপৃথিবীতে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম হলেও কার্যকরী ভ্যাক্সিনের অভাবে প্রতিবছর বিভিন্ন রোগে প্রচুর পরিমাণ মাছে মড়ক দেখা দেয়। ফলে মৎস্য উৎপাদন কমার পাশাপাশি মৎস্য চাষীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মাছের মড়ক থেকে রেহাই পেতে প্রথমবারের মতো বানিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার উপযোগী মাছের ভ্যাক্সিন উদ্ভাবন করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস বিজ্ঞান অনুষদের মৎস্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী প্রফেসর ড. মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন।

গবেষণায় দেখা গেছে ‘বায়োফ্লিম’ নামে ভ্যাক্সিনটি স্বাদুপানিতে চাষকৃত মাছের এরোমোনাস হাইড্রোফিলা (Aeromonas hydrophila)  নামক ব্যকটেরিয়াজনিত ক্ষত, আলসার, পাখনা ও লেজ পঁচা রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, চিলিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১৮ প্রজাতির মাছে ২৮ ধরনের ভ্যাক্সিন বানিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার হলেও বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই ভ্যাক্সিন মৎস্য চাষে নব দিগন্তের সূচনা করবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের। মূলত স্বাদুপানির বিভিন্ন মাছসহ পাঙ্গাস মাছের ব্যাক্টেরিয়াজনিত মড়করোধে এই বায়োফ্লিন ভ্যাক্সিনটি উদ্ভাবন হয়েছে।



গবেষণায় প্রমানিত হয়েছে যে, ভ্যাক্সিন খাওয়ানোর পর মাছের প্রত্যাশিত মড়ক রোধ করা সম্ভব। বায়োফ্লিম একটি ব্যকটেরিয়াজনিত ভ্যাক্সিন যা, প্ল্যাক্টোনিক ব্যকটেরিয়াকে ল্যাবরেটরিতে বায়োফ্লিম পর্যায়ে নেয়ার মাধ্যমে অনুজীবের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধে বিশেষ বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। গবেষক ড. মামুন জানান, পাঙ্গাস মাছের উপর গবেষণা করে ভ্যাক্সিনটি উদ্ভাবন করা হলেও ভ্যাক্সিনটি স্বাদুপানিতে চাষযোগ্য ইন্ডিয়ান মেজর কার্প যেমন রুই, কাতলা, কই, শিং প্রভৃতি মাছের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।



প্রথমে গবেষণাগারে তৈরিকৃত বায়োফ্লিম ভ্যাক্সিন নির্দিষ্ট মাত্রায় মাছের খাবারের সাথে মিশিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে খাওয়াতে হবে। পাঙ্গাস মাছের ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিনটি শতকরা ৮৪ ভাগ কার্যকরী বলে গবেষণায় প্রমানিত হয়েছে। অচিরেই ভ্যাক্সিনটি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বানিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা হলে দেশীয় বাজারে স্বল্পমূল্যে ভ্যাক্সিন পাওয়া সম্ভব হবে।