করোনা অতিমারীতে অসহায়-দরিদ্র মানুষের পাশে বাকৃবি শিক্ষার্থী মওদুদ

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:ঈদের ছুটিতে বাসায় আসেন মওদুদ। হঠাৎ বাসায় একদিন ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধা এসে বলে, বাবা তুমি তো বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়, বড় বড় পাশ দিয়েছ শুনেছি। আমাদের জন্য তুমি কিছু করতে পার না, বাবা! নিজে দুমুঠো খাইতে পারি না, বাচ্চাদের খাওয়াতে পারি না। বৃদ্ধা সেদিন চলে গেলেও মওদুদের মনে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয় বৃদ্ধার সেই কথাগুলো। করোনা মহামারীতে চারিদিকে যখন হাহাকার, অভাই যেখানে নিত্য সঙ্গি। ঠিক এই সময় দরিদ্র-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মওদুদ আহমেদ। আজ ২০ জুলাই সকালে বগুড়া জেলার গাবতলী থানার অধীনে পেরীরহাটে তার নিজ এলাকায় ১১০টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। খাদ্য সামগ্রীর মাঝে ছিল চাল-কেজি, আলু-২ কেজি, ডাল-২ কেজি, তেল-৫০০ মিলি, পিঁয়াজ-১ কেজি ও সাবান ১টি।

মওদুদ আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান তার উদ্যোগে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুরা, সিনিয়র ভাইয়া, আপু, শিক্ষক তাকে সহযোগীতা করেছে। আমেরিকা, জার্মানী, অষ্ট্রেলিয়া, কোরিয়াতে থাকা তার পরিচিতরা তার এই কাজে স্বাগত জানিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করেছেন, পাঠিয়েছেন সহযোগিতা। সবার সার্বিক সহযোগীতার ফলে এটা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি এগ্রিলাইফ২৪.কম কে বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে করোনা মহামারীর বিপর্যয়রোধে সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে অসহায় মানুষের পাশা থাকা জরুরি। সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় এই উদ্যোগ সফল হয়েছে বলে মনে করেন এবং আগামীতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

খাদ্য সামগ্রী নিতে আসা আছিয়া বেগম (৬৫) বলেন, খাবার সামগ্রী পেয়ে অনেক খুশি। আগামীকাল ঈদের দিনে স্বামী সন্তানকে দুমুঠো খাওয়াতে পারব। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এলাকার প্রবীন রফিকুল ইসলাম (৫২) বলেন, ছেলেটার উদ্যেগ সত্যিই অনেক প্রশংসানীয়। এলাকার অসহায় মানুষ তার মাধ্যমে খাদ্য  সামগ্রী পেয়েছে। আমি মওদুদের মঙ্গল কামনা করি।

যোগাযোগ করা হয় এলাকার চেয়ারম্যান জনাব মোঃ আমিনুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, ছেলেটার ছেলেটার উদ্যেগকে আমি স্বাগত জানাই। যে যার অবস্থান থেকে গরীব অসহায় মানুষদের পাশে থাকা উচিৎ। আমি মওদুদ আহম্মেদের সাফল্য কামনা করছি।

মওদুদ আহম্মেদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের অধীনে ফার্ম স্ট্রাকচার এন্ড এনভারনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাস্টার্স ও আশরাফুল হক হলের শিক্ষার্থি শিক্ষার্থী। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাফুল হক হলের প্রভোস্ট মোঃ জিয়াউল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মওদুদকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, তার কার্যক্রম আমি শুনেছি। সত্যিই এ কাজটি অনেক প্রশংসার দাবিদার। আমি তার সাফল্য কামনা করি।