তিন ভাগে বাকৃবির গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম

Category: কৃষিবিদ ও ক্যাম্পাস Written by agrilife24

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আওয়ামীপন্থি শিক্ষক সংগঠন ৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। পূর্বেই নীল দলের বিভক্ত হওয়া ছাড়াও সম্প্রতি গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম ব্যানারে চলমান আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে।

২০১৯ সালে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম থেকে নেতৃবৃন্দের স্বেচ্ছাচারিতা, সাধারণ শিক্ষকদের হয়রানি সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে আলাদা হয়ে যায় নীল দল। তারা ২০০৬ সাল থেকে ১৩ বছর গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাথে যুক্ত ছিলো। ২০১৯ সাল থেকে নীল দল আলাদা ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

সম্প্রতি গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে তৈরী হয় আরেক জটিলতা। কমিটি গঠন নিয়ে আবারো দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে সংগঠনটি। গত ১৩ এপ্রিল সংগঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মাহফুজুল হক রিপন সহ সংগঠনটির একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস মাহফুজুল বারিকে সভাপতি ও কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সালামকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে।

সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রকিবুল ইসলাম খান সহ সংগঠনটির অন্য অংশ নবগঠিত ওই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে আরেকটি নতুন কমিটি ঘোষনা করে। পরবর্তীতে ঘোষিত কমিটিতে কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমানকে সভাপতি ও ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়।

আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠনের এমন বিভাজন এবং পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরী হচ্ছে বলেও মত দেন বিশিষ্টজনেরা।

ফোরাম থেকে বের হয়ে আসা আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের আরেক সংগঠন নীলদলের আহবায়ক অধ্যাপক মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম নামে যে সংগঠন আছে তা প্রকৃতপক্ষে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নয়। এতে বামপন্থি থেকে শুরু করে বিভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষক রয়েছেন। আমরা কেবলই আওয়ামীলীগকে সমর্থন করি, এ কারণে নীল দল করছি। মূলত পদ, পদবী, ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের জন্যই গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম গঠিত হয়েছিল। আর এসব নিয়ে অসন্তোষ, কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষক বলেন, শিক্ষক রাজনীতির এই অন্তঃকোন্দলে শিক্ষা ব্যবস্থা আজ ক্ষতিগ্রস্থ। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় পদ দখল করতেই মূলত তারা রাজনীতিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি আশা করবো ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের কাজে রাজনীতিকে ব্যবহার না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ শিক্ষা, শিক্ষাপদ্ধতি, গবেষণা ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে মনোযোগী হবেন।