“একুশে ফেব্রুয়ারি- চির প্রেরণার অমর উৎস”

Category: কৃষিবিদ ও ক্যাম্পাস Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:কালজয়ী সুরকার-গীতিকার আবদুল লতিফের “ওরা আমার মুখের ভাষা/কাইড়া নিতে চায়/ওরা কথায় কথায় শিকল পরায়/আমার হাতে পায়” পঙ্কতিমালা বাঙালি-হৃদয়ে যে চেতনাকে অমর করে রেখেছে, সেই জাগরণে রাত পোহালেই পুরো বিশ্ব গাইবে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী রচিত এবং আবদুল লতিফ ও আলতাফ মাহমুদ সুরারোপিত অমর কথা “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো/একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি”।

২১শে ফেব্রুয়ারি-বাঙালির নিজের ভাষায় কথা বলার বিশ্বজয়ী অহংকারের দিন। বাঙালির আবেগ, ভালোবাসা, আত্মপরিচয়ের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়া প্রেরণার উৎস এই দিনটি ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উদ্যোগে ইউনেস্কোর হাত ধরে জাতীয় পরিমন্ডল ভেদ করে বিশ্বব্যাপি স্বীকৃতি লাভ করে “আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে।

১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের ঢাকায় পল্টন ময়দানে “উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা” বক্তব্যের প্রতিবাদে ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টায় ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে জড়ো হয় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী। মাতৃভাষা বাংলার সম্মান রক্ষার তাগিদে “রাষ্টভাষা বাংলা চাই” শ্লোগানে শ্লোগানে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করেছিলেন রফিক, জব্বার, বরকত, শফিকসহ বাংলার দামাল ছেলেরা। আমরা শ্রদ্ধাবনতচিত্তে স্মরণ করি সকল ভাষা শহীদদেরকে। বাঙালি জাতীয়তাবোধের চেতনা থেকে উৎসারিত এই আন্দোলন ক্রমে ক্রমে ধাবিত হয়েছিল স্বাধিকার তথা স্বাধীনতার আন্দোলনে। তাই একুশে ফেব্রুয়ারির যে চেতনা আমাদের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে সাহায্য করেছে, সেই দিনটিকে শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, প্রজন্মান্তরে বুকে ধারণ করতে হবে।

পৃথিবীতে মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার জন্য আত্মহুতি দেওয়ার ঘটনা বিরল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, মাতৃভাষার চর্চা ও বিকাশের ক্ষেত্রে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি, যা ভাষা আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ জন্য প্রত্যেকের ব্যক্তিগত উপলদ্ধিকে শাণিত করতে হবে। পরিভাষা, অভিধানসহ সম্ভাব্য সব উপকরণ সহজলভ্য করার মাধ্যমে ভাষাচর্চার পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং বিনা প্রয়োজনে বিদেশি ভাষা ব্যবহারের অপচেষ্টাকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। তবেই ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করা সম্ভব হবে বলে বাকৃবি নীল দল বিশ্বাস করে।

গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার প্রয়াসই হোক মুজিববর্ষের একুশের অঙ্গীকার।