এনিমেল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েটদের অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রাণিসম্পদ সেক্টরে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে

Category: বিজনেস ও ইন্ডাস্ট্রি Written by agrilife24

রাজধানী প্রতিনিধি: বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরে এনিমেল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েটদের ভূমিকা অপরিসীম। তাঁদের গবেষণা, গবেষণালদ্ধ ফলাফল প্রয়োগ এবং খামারিদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ সেক্টরে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এনিমেল হাজবেন্ড্রি গ্র্যাজুয়েটদে অক্লান্ত পরিশ্রম, গবেষণা ও গবেষণালদ্ধ ফলাফলে যথাযত প্রয়োগের মাধ্যমে এই সেক্টর আরো উত্তরোত্তর উন্নতি সাধন করবে এবং দেশে প্রাণিজ আমিষ প্রাপ্তির নিশ্চায়তা নিশ্চিত হবে।

শনিবার (২৭ মে) রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনের ১১তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও এ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসিআই এগ্রিবিজনেসেস-এর প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের খামারিরা প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদন বাড়াচ্ছে। এখন আমাদের Productivity বাড়ানোর জন্য উপযুক্ত Technology এর ব্যবহার ও পর্যাপ্ত গবেষণায় ফোকাস করতে হবে ও উৎপাদিত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর ব্যাপকতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যেতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরের অংশগ্রহণ ও গবেষণা সক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে বিনীত অনুরোধ জানান তিনি।

আমরা যে মুরগী ও গরুর মাংস উৎপাদন করছি সেখানে Value Add করা খুব জরুরী। Value Add -এর মাধ্যমে পণ্যে Shelf life বাড়বে ও আমরা পণ্য রপ্তানি করতে পারব। এই সেক্টর থেকে যে বাই প্রডাক্ট পাওয়া যাবে তা অর্গানিক ফার্টিলাইজার কিংবা Concentrated Protein হিসাবে ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ড. আনসারী।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাননীয় মন্ত্রীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে ড. আনসারী বলেন, তার ডাইনামিক নেতৃত্বে প্রাণিসম্পদ সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। মন্ত্রী মহোদয় এর অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা প্রাণিসম্পদ খাত সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণ ও খামারিরা নতুন করে আশার আলো দেখছেন। খামারির মাছ, মাংস ও ডিম রাস্তায় বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন এমনকি নিজেও কোন কোন জায়গায় অংশ নিয়েছেন, যা ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা। দেশে আজকে গরুর মাংসের অনেক দাম এর কারন আমাদের গরুর এফসিআর অনেক বেশি, দেশি গরুতে ১১ কেজি খাবার খাওয়ালে ১ কেজি মাংস পাওয়া যায়, শংকর জাতের গরুতে ৭ কেজি খাদ্যে ১ কেজি মাংস পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের দেশে উন্নত জাতের ব্রাহমা গরু নিয়ে পুরবে কিছু কাজ হয়ে ছিল এবং এ সমস্ত গরু থেকে প্রতি ৫ কেজি খাবারে ১ কেজি মাংস পাওয়া যায়, আমাদের গ্রামীণ পরিবেশে এদের লালন পালন করা যায় ও আমাদের গৃহস্থালি মেয়েদের সাথেও এরা বন্ধুসুলভ আচরণ করে সেই গরু গুলো আরো নিয়ন্ত্রিত ভাবে খামারিদের পালন ও মাংস উতপাদনের অনুমতি দিলে খামারি উপকৃত হবে ও দেশেও মাংসের দাম কমে আসতে পারে।

সে লক্ষে মাননীয় মন্ত্রীর প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়ে ড. আনসারী বলেন, আমাদের দেশে একটা ভাল জাতের গরুর জাত প্রয়োজন, যার এফসিআর হবে প্রতি ৫ কেজি বা ৪ কেজি খাদ্য খেয়ে ১ কেজি মাংস, ১ টন কিংবা সোয়া টন ওজন হবে, মাংস সুস্বাদু হবে, স্থানীয় ভাবে লালন পালন করলে রোগ বালাই কম হবে। একটি উন্নত জাত আমাদের প্রাণিসম্পদ সেক্টরে উপহার দিয়ে মাননীয় মন্ত্রী একটি উদাহরণ সৃষ্টি করবেন, যার নাম হতে পারে "বাংলার গর্ব" কিংবা "সোনার বাংলা" যার জন্য বাংলার মানুষ যুগে যুগে আপনাকে মনে রাখবে, খামারিরা লালন পালন করে উপকৃত হবে, মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, এফসিআর কম হবে, আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম খরচে মাংস উৎপাদন করে দেশের মানুষকে খাওয়াতে পারব এবং দেশের বাহিরে মাংস রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

এসিআই এগ্রিবিজনেস ক্যাটেল, পোল্ট্রি ও এক্যুয়া ভ্যালু চেইনের প্রায় সর্বত্রই কাজ করে থাকে। তাদের কাজের পরিধি যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই সাথে উন্নত সকল টেকনোলজি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তাদের প্রতিষ্ঠান। প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে দেশের এনিমেল হাজবেন্ড্রি গ্রাজুয়েটদের পাশে এসিআই এগ্রিবিজনেস পাশে থাকবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের প্রাণিসম্পদ খাত এগিয়ে যাবে বলে আশা করেন ড. আনসারী।