কৃষির বাণিজ্যিকীকরণে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী

Category: বিজনেস ও ইন্ডাস্ট্রি Written by agrilife24

আবুল বাশার মিরাজ:বাংলাদেশের কৃষিকে বাণিজ্যকরণের জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। রবিবার কৃষিবিদ ইনস্টিউশনে আভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য নিরাপদ কৃষি পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য উদ্ভিদ সংগনিরোধ পরীক্ষাগারগুলির আপগ্রেডেশন এবং যোগ্য কর্মশক্তির উন্নয়ন বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু পণ্যজাত খাবার নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি ও সন্দেহ রয়েছে, সেগুলো দূর করতে কৃষিমন্ত্রণালয় অনেক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পোস্ট হারভেস্ট লস কমিয়ে খাদ্যের অপচয় রোধে আমরা কাজ করছি। আন্তজার্তিক বাজারে পণ্য রপ্তানি করতে যেসসব বাধা ছিল সেগুলোও একে একে দূর করা হচ্ছে। বিদেশে আমাদের কৃষি পণ্য রপ্তানি না করা গেলে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব নয়।

দুপুর ২ টার দিকে কৃষি সচিব জনাব মোঃ সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ এর অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিসেস শরিফা খান, সচিব ও সদস্য, কৃষি, পানি সম্পদ ও গ্রামীণ প্রতিষ্ঠান বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন, অর্থ মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ বেনজীর আলম, মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।



অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডঃ জগৎ চাঁদ মালাকার, প্রকল্প পরিচালক, “কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাবরেটরীকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরীতে রুপান্তর” শীর্ষক প্রকল্প।

উক্ত অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষনা কেন্দ্রের মূখ্য বিজ্ঞানী ড. মোঃ লতিফুল বারী, এবং মুল প্রবন্ধের উপর দুই জন বিশেষজ্ঞ যথাক্রমে ওয়াহিদা আক্তার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন), কৃষি মন্ত্রণালয়, এবং ডঃ মোঃ সালেহ আহমেদ, চেয়ারম্যান, কারনেল ইন্টারন্যাশনাল লিঃ, বিশদ আলোচনা করেন।

মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ডঃ মেহেদী মাসুদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আবু জাফর আনসারী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াফেন রিসার্চ ল্যাবরেটরী, মোঃ এস. এম জাহাঙ্গীর হোসেন, বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবল এন্ড এলাইড প্রোডাক্ট এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন।



সেমিনারে কৃষি সচিব জনাব মোঃ সায়েদুল ইসলাম বলেন,, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীন উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং আমদানিকৃত উদ্ভিদ পণ্য থেকে বিপজ্জনক কীটপতঙ্গ এবং রোগের প্রবর্তন থেকে দেশের কৃষিকে রক্ষা করে এবং রপ্তানিযোগ্য গাছপালা এবং উদ্ভিদ পণ্যগুলি আমদানিকারক দেশের নিয়ম ও প্রবিধান মেনে রপ্তানী করে থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, সরকার রপ্তানি পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা চালু করেছে।  উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ে সীমিত প্রযুক্তিগত কর্মী রয়েছে এবং তাদের গবেষণাগারের আধুনিকীকরনের কাজ এবং দক্ষ কর্মচারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য হাতে কলমে ল্যাব প্রশিক্ষনের কাজ শুরু হয়েছে।



সেমিনারে উপস্থিত বিশেষজ্ঞগণের আলোচনা গুলির বিশ্লেষণমূলক পর্যালোচনায় দেখা যায় বাংলাদেশ বিপুল বৈচিত্র্যের কৃষিপণ্য উৎপাদন করে এবং বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে প্রায় ১০০ ধরনের ফল ও সবজি রপ্তানি হয়। গত এক দশকে বাংলাদেশের তাজা ফল ও সবজি রপ্তানি নাটকীয়ভাবে প্রসারিত হয়েছে এবং বাংলাদেশের কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় ১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এই প্রবণতাকে টিকিয়ে রাখতে এবং রপ্তানী রপ্তানি আয় ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীতকরনে বাণিজ্য নীতি প্রবর্তন করা হয়েছে। ভুট্টা, আলু এবং টমেটোর মতো কৃষিপণ্যকে মূল্য সংযোজন খাদ্য পণ্য হিসেবে রপ্তানির জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত করতে হবে। বিদেশী ক্রেতাদের আস্থা বাড়ানোর জন্য প্রত্যয়িত পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমে পণ্যের গুণমান অবশ্যই যাচাই করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য টেকসই কৃষিতে একটি দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন ইতিমধ্যেই হয়েছে, কৃষি উৎপাদন বাণিজ্যিকীকরণ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।



মাঠপর্যায়ের কর্মীদের হালনাগাদ বিশ্লেষণমূলক পদ্ধতি এবং কৌশলগুলিতে প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং লাব কর্মীদের দক্ষতা এবং বৈধতা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হবে যাতে তারা সামনের দিকে প্রাসঙ্গিক দক্ষতা বজায় রাখতে পারে তা নিশ্চিত করে। নিয়মিত পরীক্ষাগার পরীক্ষার জন্য সমসাময়িক প্রযুক্তি এবং একটি যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মীবাহিনীর সাথে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষাগার সুবিধা স্থাপন করা প্রয়োজন। তা না হলে আমদানিকৃত পণ্যের সঙ্গে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই প্রবেশ করে দেশের উৎপাদনশীলতা বিনষ্ট হওয়ার অনেক ঝুঁকি রয়েছে।