সয়াবিন মিল রপ্তানি প্রসঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে পরবর্ত্তী সিদ্ধান্ত গ্রহনের অনুরোধ

Category: বিজনেস ও ইন্ডাস্ট্রি Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:দেশে সম্ভাবনাময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদন অব্যাহত রাখার স্বার্থে দেশের উৎপাদন ব্যবস্থায় উৎপাদিত সয়াবিন মিল-এর পরিমান, মৎস্য ও পোল্ট্রি শিল্পে এর চাহিদা, স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত যোগান/ঘাটতি বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনা করার জন্য জরুরী ভিত্তিতে সচিব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, সচিব কৃষি মন্ত্রণালয়, সচিব মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়-এর সমন্বয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

রবিবার (৩ অক্টোবর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ-২ অধিশাখার উপসচিব ড. অমিতাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এক অতি জরুরী চিঠির মাধ্যমে এ অনুরোধ জানানো হয়।

গত ২০ সেপ্টেম্বর ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিয়াব)-এর প্রেরিত চিঠি যার স্মারক নং-FIAB/সয়াবিন মিল রপ্তানি/২০২১/০০৩৩-এর পরিপ্রেক্ষিতে চিঠিটি অতি জরুরি ভিত্তিতে বানিজ্য সচিব বরাবরে প্রেরণ করা হয় বলে জানা গেছে।

চিঠিতে বলা হয় দেশে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ক্রমবর্ধমান হারে বিনিয়োগ ও উৎপাদনের ক্ষেত্র বাড়ছে। শ্রমঘন এ সেক্টরের সফলতার কারণে দেশ মাছ, মাংস এবং ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দুধেও স্বয়ংসম্পূর্ণতাও অর্জন হতে চলেছে। দানাদার মৎস্য ও পশু খাদ্যের অন্যতম উপাদান সয়াবিন মিল-এর চাহিদা বছরে প্রায় ১৮-২০ লক্ষ মেট্রিক টন। সয়াবিন তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ সয়াবিন সীড হতে তেল আহরণ শেষে উপজাত হিসেবে প্রাপ্ত "সয়াবিন মিল" স্থানীয় চাহিদার প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ পূরণ করে অবশিষ্ট ২৫ থেকে ৩০ ভাগ সয়াবিন মিল আমদানী করা হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দেশে ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি ভারতে সয়াবিন মিল রপ্তানি করা হচ্ছে মর্মে জানা যায়। রপ্তানির কারণে স্থানীয় বাজারে "সয়াবিন মিল"-এর মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। গেল বছরের আগস্ট ২০২০-এ যে সয়াবিন মিল প্রতিকেজি ৩৮.২৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও চলতি ২০২১-এর আগস্টে প্রতি কেজি সয়াবিন মিল ৫৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে অর্থাৎ সে সময়ের ব্যবধানে প্রতি কেজি সয়াবিনের মূল্য ৪১.১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

"সয়াবিন মিল"-এর সরবরাহ কমে যাওয়ায় ফিড মিলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং পোল্ট্রি-মৎস্য পশু খাদ্যের মূল্যর বৃদ্ধি পেয়েছে এর প্রভাবে বাজারে মাছ-মাংস ডিমের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিরাজমান অবস্থা চলতে থাকলে মাছ-মাংস-দুধ ডিমের উৎপাদন বিঘ্নিত হবে, বাজারে এসব পণ্যের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাশাপাশি জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অনেক খাসার বন্ধ হয়ে যাবে ফলে আত্মকর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাবে। সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলবে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, গত ৯ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জনাব এ জেড এম নুরুল হক উপস্থিত ছিলেন। সভায় তিনি ফুড প্রসেসিং-এ সয়াবিন মিল-এর উৎপাদন, বর্তমান চাহিদা, ঘাটতি এবং স্থানীয় চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে বিদেশ হতে অতিরিক্ত সয়াবিন মিল আমদনীর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরলেও রেজুলেশনের তা লিপিবদ্ধ হয়নি বরং সয়াবিন মিল রপ্তানির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সদয় অবগতির জন্য চিঠিটির অনুলিপি মহাপরিচালক মৎস্য অধিদপ্তর ও মহাপরিচালক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, অতিরিক্ত সচিব প্রাণিসম্পদ-২ অনুবিভাগ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, সচিবের একান্ত সচিব, সচিবের দপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় (সচিব মহোদয়ের অবগতির জন্য), সাধারণ সম্পাদক ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।