উত্তরাঞ্চলের সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিবে ব্রি ধান৭৫

Category: ফার্ম টু ডাইনিং Written by agrilife24

কৃষিবিদ মো: আবু সায়েম:ব্রি ধান৭৫ একটি সম্ভাবনাময় আমনের আগাম ও স্বল্পজীবনকাল বিশিষ্ট জাত হওয়ায় সারা দেশে বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে আগাম আলু, সরিষা, ভুট্টা, গমসহ অন্যান্য রবি শস্য চাষে সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিবে। ইউএসএআইডি অর্থায়নে সিসা (Cereal Systems Initiative for the South Asia) প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর রাইছ ফার্মিং সিস্টেমস বিভাগের তত্বাবধানে রংপুর তারাগঞ্জ উপজেলার খিয়ার জুম্মায় কৃষক সুবাস চন্দ্রের ক্ষেতে পরীক্ষাপ্লটে চারার বয়স ও বীজ বপনের তারিখের ওপর ব্রি ধান৭৫ জাতের ফলনের তারতম্য পরীক্ষা করা হয়।

সিসা ব্রি অঙ্গের মুখ্য অনুসন্ধানকারী ও রাইস ফার্মিং সিস্টেমস বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমিনা খাতুন, বলেন এ জাতটির উৎপাদন প্রযুক্তিতে ২০ জুলাই থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে বীজ বপনের কথা বলা হলেও ২০ জুনে বীজ বপন করে ১০ জুলাইয়ে ২০ দিনের চারা রোপণ করে মাত্র ১০৪ দিনে ফসল কর্তনের মাধ্যমে হেক্টর প্রতি ৫ টন ফলন পাওয়া যায়। তিনি আরও উল্লেখ করেন অক্টোবরের এ সময় এ অঞ্চলে উৎপাদিত অন্যান্য উফশী জাতের তুলনায় আগাম এ জাতটিতে অধিক ফলন পাওয়া যায়। আগাম হওয়ায় ব্রি ধান৭৫ কর্তনের পর অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই আগাম আলু, সরিষা, ভুট্টা বা উচ্চমূল্যের অন্যান্য রবি ফসল খুব সহজে চাষ করা সম্ভব। এর ফলে জাতীয়ভাবে ফসলের নিবিড়তা বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে।

প্রতিবেশি কৃষক বাদল মিয়া জানান এ সময় পশুখাদ্যের অভাব থাকে ফলে এ ধানটি চাষে খড়ের অধিক মূল্য পাওয়া যাবে। আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা বিশেষজ্ঞ মো. আবু আব্দুল্লাহ মিয়াজী এ জাতের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলেন, এ জাতটির চাল লম্বা ও সরু। এছাড়া রান্নার পর হালকা সুগন্ধিও পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন এ জাতটি সিসা প্রকল্পের আওতায় ভোক্তা পর্যায়ে চাল পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে অটো রাইছ মিলারদের উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে ব্রান্ডিং করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, স্বল্পমেয়াদি এ জাতটি আবাদের মাধ্যমে কৃষকের নতুন নতুন ফসল আবাদের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিবে। কৃষকরা এ জাতটি কর্তনের পর সহজেই রবি জাতীয় ফসল আবাদ করতে পারবে। আবার এ ধানটি আগাম ঘরে তোলার কারণে এবং প্রিমিয়াম কোয়ালিটি হওয়ায় কৃষকের অধিক বাজার মূল্য নিশ্চিত হবে। দেশের সর্বত্র বিশেষ করে উত্তরের কৃষকের জন্য এ জাতটি আশির্বাদ বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।