খাদ্যের অপচয় এবং ক্ষতি হ্রাসের উপায় নিয়ে তরুণদের সংলাপ

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:২০১৪ সাল থেকে বিশ্বে ক্ষুধায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং যেখানে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে ভোজ্য খাদ্য নষ্ট হয়, সে অবস্থায় খাদ্যের অপচয় রোধ এবং খাদ্য বর্জ্য হ্রাস করা অপরিহার্য। ঢাকায় প্রতিদিন আট হাজার (৮০০০) টনের বেশি বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার শতকরা ৭০ ভাগই খাদ্য বর্জ্য।

এ বছর দ্বিতীয় বারের মত খাদ্যের অপচয় ও ক্ষতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সচেতনতা দিবস (২৯ সেপ্টেম্বর) উদযাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্যোক্তা, পেশাজীবী এবং উদ্ভাবকেরা একটি ভার্চুয়াল সংলাপে বাংলাদেশের খাদ্যের অপচয় এবং ক্ষতি হ্রাসের উপায় নিয়ে আলোচনা করে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় এ সংলাপটি আয়োজন করা হয়।

বিশ্বের শতকরা ১৪ ভাগ খাদ্যপণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে অপচয় হয় এবং মোট উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় ১৮ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায় (গৃহস্থলিতে শতকরা ১১ ভাগ, হোটেল/রেস্টুরেন্টে শতকরা ৫ ভাগ এবং বাজারে শতকরা ২ ভাগ)। খাদ্যের অপচয় এবং ক্ষতি টেকসই খাদ্য ব্যবস্থার জন্য অন্যতম হুমকি।  

যখন খাদ্য অপচয় বা নষ্ট হয়, তখন পানি, জমি, শক্তি, শ্রম এবং মূলধন সহ খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত সমস্ত সম্পদ নষ্ট হয়। এছাড়াও  ময়লার ভাগাড়গুলোতে  খাদ্য বর্জ্য ফেলার কারণে আরও বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমিত হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। খাদ্যের অপচয় এবং ক্ষতি নেতিবাচকভাবে খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে এবং খাবারের ব্যয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে ।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সলিমুল হক পরিবেশের ক্ষতির কথা তুলে ধরেন যা খাদ্য বর্জ্য সৃষ্টি করে।  ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইসিসিসিএডি) পরিচালক এবং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের অধ্যাপক, প্রফেসর হক, বলেন, এ পরিস্থিতির উন্নতি এবং এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে দেশের তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এফএও এর ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের চীফ টেকনিকাল অ্যাডভাইজার, জন টেইলর, বলেন: “খাবারের অপচয় এবং ক্ষতি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। খাদ্যের অপচয় রোধ এবং ক্ষতি হ্রাসের মাধ্যমে আমাদের খাদ্য ব্যবস্থাকে টেকসই করা, পরিবেশকে উন্নত করা এবং ঢাকার মতো শহরগুলোকে পরিচ্ছন্ন ও আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব।

এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন–গারবেজম্যান -এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম উদ্দিন শুভ; পজিটিভ ইনিশিয়েটিভ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও টেকনিক্যাল লিড কাজী মুনির রহমান; বিডি ক্লিন-এর জেলা সমন্বয়ক ওমর ফারুক; বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবক ফারুক আহমেদ; এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সিএস-কর্প ফাইন্যান্স ডিরেক্টর উজমা চৌধুরী।