সমুদ্র অন্বেষণ: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি সম্ভাব্য হাতিয়ার

Category: সমসাময়িক Written by agrilife24

এগ্রিলাই২৪ ডটকম: সমুদ্র অন্বেষণ: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি সম্ভাব্য হাতিয়ার শীর্ষক এক আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলেছেন, সমূদ্র অর্থনীতির সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলো অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তার ইপ্শিত অগ্রযাত্রায় সফলতার সাথে উন্নতির শিখরে পৌঁছবে। এ অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সরকারি, বেসরকারি ও প্রয়োজনে বৈদেশিক অংশীদারিত্বকে প্রাধ্যান্য দিয়ে কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ নর্থ আমেরিকান জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক আয়োজিত শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় সমূদ্র অর্থনীতির  সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো ও চলমান পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করে বিশিষ্ট গবেষক, লেখক, সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদগণ অংশগ্রহণ করেন । এতে সভাপতিত্ব করেন কানাডা প্রবাসী লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক, বাংলাদেশ নর্থ আমেরিকান জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার জাহিদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের অন্যতম নেতা এবং দৈনিক বাংলাদেশের খবর এর সাবেক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভূইয়াঁ।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ এর ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস. এম. রফিকুজ্জামান। মুখ্য আলোচক হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. এস. জে আনোয়ার জাহিদ।

মূল প্রবন্ধে ড. এস. এম. রফিকুজ্জামান সামুদ্রিক শৈবাল নিয়ে তার গবেষণার বিষয় উল্লেখ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য এর নানাবিদ কার্যকারিতাকে তুলে ধরেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, শৈবাল-ভিত্তিক পলিমার গুলিতে (পলিস্যাকারাইড) এবং ঔষধ সরবরাহ, ক্ষত ড্রেসিং এবং টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো বায়োমেডিকাল অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে এগুলোর ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে বলে জানান । শৈবাল-ভিত্তিক পলিমারের চাহিদা বৃদ্ধি এবং এই অ্যাপ্লিকেশনগুলির জন্য এগুলোকে সম্ভাব্য-খুব সস্তা-সম্পদ বলে জানান এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বায়োমেডিকাল অ্যাপ্লিকেশন, এবং সামুদ্রিক শৈবাল পলিস্যাকারাইডের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও তুলে ধরেন। বাংলাদেশের জাতীয় জলজ খাদ্য উৎপাদনে পরিবেশ, মানব ও প্রাণী স্বাস্থ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট নীতিমালাকে আরো সমৃদ্ধ করার আহ্বান জানান। জলজ খাদ্য উৎপাদন এবং বাংলাদেশ সরকারের সদিচ্ছা ও বাণিজ্য আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে এবং, একটি দীর্ঘস্থায়ী কাঠামো তৈরি করার জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রফেসর ড. এ কে এম রেজাউর রহমান, ডিপার্টমেন্ট অব ফিজিক্স, চিটাগাং ইউনিভার্সিটি, সাঈদ হাসান, প্রোগ্রাম, পরিচালক, প্রশিকা প্রমুখ।

মূল আলোচনা অধ্যাপক ড. এস. জে আনোয়ার জাহিদ উত্থাপিত প্রবন্ধটিকে সময় উপযোগী ও গুরুত্বপূর্ন অর্থনৈতিক একটি বিষয় বলে উল্লেখ করে তা সমূদ্র অর্থনীতির লক্ষ্য অর্জনে একটি মাইল ফলক বলে প্রশংসা করেন।

সাঈদ হাসান  প্রোগ্রাম, পরিচালক প্রশিকা উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে, বিশেষ করে চরাঞ্চলে সামাজিক বনায়ন সহ বিভিন্ন প্রকল্পের বরাত দিয়ে সামাজিক ট্যুরিজম ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলার অপার সম্ভাবনার কথা জানান। তিনি মালদ্বীপের উদাহরণ টেনে বাংলাদেশকে বিকল্প আবাসন ব্যবস্থা গড়তে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথি আজিজুল ইসলাম ভূইয়াঁ বাংলাদেশের মানুষের জীবন, জীবিকা ও অর্থনীতির উন্নয়নে দেশে সমুদ্রবিজ্ঞান শিক্ষায় জোর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাত্তোর উপলব্ধি করেছিলেন যে সমুদ্রে আমাদের একটি নিরাপদ এবং সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইনকাঠামোর প্রয়োজন। বর্তমান সরকার সুমুদ্র অর্থনীতিকে গড়ে তুলতে সামুদ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও অনুসন্ধানের সুনির্দিষ্ট কতগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে জাতি হিসেবে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) পরিচালক নাসিমা আক্তার, হাসান সাঈদ,ফিরোজ মিয়া, শামসুল হাবিব, শিরিন ফেরদোউসী, এসরার খসরু। এছাড়াও সংযুক্ত হন তাম্মিম মাহমুদ ও নজরুল ইসলাম বাবুল, ইভানা হোসাইন, মোহাম্মদ রাফাত প্রমুখ।