'ইউজিসি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলোশিপ’ পেলেন বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এম.আফজাল হোসেন

Category: সমসাময়িক Written by agrilife24

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু:বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন প্রবর্তিত ইউজিসি বঙ্গবন্ধু ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পুষ্টিবিদ ও বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী  ও শিক্ষাবিদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এম. আফজাল হোসেন। তিনি ১ আগস্ট, ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান এর নিকট যোগদান করেছেন।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন দেশের উচ্চ শিক্ষায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনবদ্য অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে আগামী এক বছরের জন্য “ইউজিসি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলোশিপ-২০২১” এর জন্য ফেলো হিসেবে তাঁকে এই নিয়োগ প্রদান করেন।  প্রফেসর ড. এম. আফজাল হোসেন এর শিক্ষা, গবেষণা, প্রকাশনা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কর্ম অভিজ্ঞতা, গবেষণা কাজের সংশ্লিষ্টতা, গ্রহণযোগ্যতা এবং ফেলোশিপ নীতিমালার উদ্দেশ্যাবলির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে এ গুরুত্বপূর্ণ ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন।

“এক্সপ্লোরিং দ্যা পটেনশিয়াল অব সিউইডস ফর প্রমোটিং দ্যা বøু ইকোনোমি অব বাংলাদেশ” শীর্ষক গবেষণা প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে তিনি ইউজিসি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মঞ্জুরী কমিশন এর চেয়ারম্যান ও ইউজিসি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলোশিপ মনোনয়ন কমিটির আহŸায়ক প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ’র জানান যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই মায়ানমার ও ভারতের সাথে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে। অপার সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত বøু ইকোনোমির সুবিধা পেতে ব্যাপক গবেষণা করা প্রয়োজন। বøু ইকোনোমির অপার সম্ভাবনা সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে পারলে দেশে বেকারত্ব দূর হবে, অর্থনীতি গতিশীল হবে এবং ২০৪১ এর মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নত দেশ বিনির্মাণ সহজ হবে। প্রফেসর ড. আফজাল হোসেন এর গবেষণা পত্রটি সুনীল অর্থনীতির একটি অপার সম্ভাবনাময় দিক সম্পর্কে নতুন ধারণা দিতে সক্ষম হবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রফেসর ড. এম. আফজাল হোসেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণতম প্রফেসর। তিনি উত্তরবঙ্গে উচ্চশিক্ষার প্রাণকেন্দ্র দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে বগুড়ার শীর্ষ বেসরকারি বিদ্যাপীঠ পুন্ড্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও টিএমএসএস-এর উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ড. আফজাল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদ থেকে প্রথম শ্রেণীতে ১৯৭৪ সনে স্নাতক ও ১৯৭৬ সনে প্রাণ রসায়ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ১৯৮৪ সনে ভারতের হরিয়ানার জাতীয় ডেয়রি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ইউএস-এইড ফেলোশিপের আওতায় ১৯৮৭ সনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে খাদ্য বিজ্ঞান ও পুষ্টি বিভাগে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা কাজ সম্পন্ন করেন। তাছাড়া, ইইসি পোস্টডক্টরাল ফেলোশিপের অধীনে তিনি ১৯৯১ সনে বেলজিয়ামের ব্রাসেল্স্-এর “ইনস্টিটিউট অব সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার প্যাথলজি”-তে এক বছর গবেষণা করেন। তিনি কৃষি বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ হিসেবে দেশী বিদেশী সাহায্যপুষ্ট উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গবেষণা প্রকল্পের প্রধান হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পঞ্চাশটির অধিক সেমিনার ও পলিসি ফোরামে অংশগ্রহণ করে খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক প্রাণরসায়ন চর্চার ব্যাপক প্রসারে মূল্যবান অবদান রাখেন। এর সমান্তরালে তিনি এদেশের উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগ-চাহিদার সঠিক প্রতিফলন ঘটিয়ে বৈশ্বিকমানে উন্নীত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর আদর্শকে সমুন্নত রাখার প্রত্যয়ে তাঁর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিবন্ধ, রিপোর্ট, বই-পত্র প্রকাশিত হয়েছে।

প্রফেসর আফজাল হোসেন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মাজবাড়ি গ্রামের ছবদের রহমান ও জামিলা খাতুনের পুত্র। ব্যক্তিজীবনে তিনি এক পুত্র ও এক কন্যার পিতা। তাঁর স্ত্রী বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পরিচালক হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত।

উল্লেখ্য, প্রফেসর ড. এম. আফজাল হোসেন ফেলোশীপের শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখিত বিষয়ে গবেষণা কাজ পরিচালনা করবেন।