করোনা মোকাবেলায় জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে কভিড ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি

সমসাময়িক ডেস্ক:বাংলাদেশে বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংক্রমনের ক্রমবর্ধমান উর্ধ্বগতির কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতি, নিত্যপণ্য ও সেবা সার্ভিসের লাগামহীন উর্ধ্বগতির কারনে সাধারণ মানুষ জীবন ও জীবিকা রক্ষায় নাজুক পরিস্থিতির শিকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় কভিড ব্যবস্থাপনা কমিটি, জেলা ও উপজেলা গঠিত কভিড ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করলেও এই কমিটির দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়নি। কমিটির কার্যক্রমের দৃশ্যমান অগ্রগতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, স্থানীয় চাহিদা ভিত্তিতে করনীয় নির্ধারণে দৃশ্যমান অগ্রগতি, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।

১৫ এপ্রিল ২০২১ইং গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান উপরোক্ত দাবি জানান।  

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন ২০২০ সালে করোনায় লকড ডাউন চলাকালে সরকার জেলা-উপজেলা পর্যায়েও কভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলে স্থানীয় প্রশাসন তাদের নিজেদের অনুগত, সমর্থকদের নাম দিয়ে কমিটির তালিকা তৈরী করে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করলেও কার্যত এই কমিটি কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ ছিলো। লকড ডাউন চলাকালীন ত্রাণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, চিকিৎসা, প্রণোদনা বিতরণ, করোনা মহামারী প্রতিরোধ, স্থানীয় জনগনকে সম্পৃক্ত করা, সামাজিক প্রতিরোধ, জনসমাগম রোধ ও সচেতনতা বাড়ানোর কাজে এই কমিটির কোন তৎপরতা বা কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি। সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত ও অতিরিক্ত ফিস আদায় বন্ধ, চিকিৎসা, সুরক্ষা সমাগ্রী, জীবন রক্ষা ওষুধ ও অক্সিজেনের মূল্য লাগামহীন উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর মনিটরিং না থাকায় নৈরাজ্য ও হাহাকার বিরাজমান। সাধারণ মানুষ একদিকে জীবন অন্যদিকে জীবিকার তাড়না। আয় রোজগার কমে অনেকেই নিঃশ্ব হয়েছেন। আর এর মধ্যে নিত্যভোগ্যপণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। বিভিন্ন অজুহাতে ব্যবসায়ীরা মানুষের পকেট কাটলেও প্রশাসন জনজীবনের নিত্যসমস্যা সমাধানের পরিবর্তে মাস্ক বিতরণে ব্যস্ত।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন করোনা একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা বিগত ০১ বছরে কোন সভা অনুষ্ঠান বা এ ব্যপারে কোন কার্যক্রম গৃহিত হবার সংবাদ নেই। সেকারনে জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি কার্যত মৃত। অথচ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা চিহ্নিত করে সমস্যাগুলি সমাধানে স্থানীয় উদ্যোগে করনীয় নির্ধারন ও প্রয়োজনীয় বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পরামর্শ প্রদানের জন্য এই কমিটি গঠিত হলেও ফলাফল শুন্য। এখন সববিষয়ের জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দৃষ্ঠি আকর্ষণ ও হস্তক্ষেপ ছাড়া কোন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

বিবৃতিকে ক্যাব নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ভোক্তা সরক্ষন আইন ২০০৯ অনুসারে ক্যাব দেশের ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং এফবিসিসিআই ও ওষুধ শিল্প সমিতি দেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। সরকারের জনস্বার্থ সংস্লিষ্ঠ বিভিন্ন কমিটি গঠনের সময় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসাবে বিভিন্ন চেম্বার ও এফবিসিসিআই এর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হলেও ভোক্তাদের প্রতিনিধি হিসাবে সংস্লিষ্ঠ কমিটির সভাপতির অনুগত ও পোষ্য একজনকে মনোনিত করা হয়। যার কারনে ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয় না। অনেক সময় কমিটিগুলি সরকারের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বশীল লোকজন ও ব্যবসায়ীদের দেন-দরবারের আসর হিসাবে পরিনত হয়। সাধারন ভোক্তাদের স্বার্থগুলি এখানে চরমভাবে উপেক্ষিত হয়। তাই জনস্বার্থ সংস্লিষ্ঠ কমিটিগুলিতে ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা না হলে তৃণমূলে জবাবদিহিতা, সুশাসন ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় সরকারের মহতী উদ্যোগুলির সুফল সাধারণ জনগন পাবে না।