সংবাদমাধ্যমে ডিমের পুষ্টিগুণ বেশি প্রচার করার অনুরোধ

Category: ফোকাস Written by agrilife24

শেকৃবি প্রতিনিধিঃ "ডিম একটি সুপারফুড। ডিমের পুষ্টিগুণ একই দামের অন্যান্য খাদ্যের তুলনায় বহুগুণ বেশি। ডিমের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে মিডিয়ায় তেমন আলোচনা দেখা যায় না। আমি সংবাদমাধ্যমে ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে আরো বেশি প্রচার করার আহবান জানাচ্ছি"।

বিশ্ব ডিম দিবস ২০২২ উপলক্ষে আজ ১৬ অক্টোবর রবিবার বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি শেষে ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনাকালে এএসভিএম অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. লাম ইয়া আসাদ এ অনুরোধ জানান।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি)-এর এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ এবং পোল্ট্রি প্রফেশনাল'স বাংলাদেশ (পিপিবি) যৌথভাবে পালন করে বিশ্ব ডিম দিবস ২০২২।  বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল ভবনের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালির আয়োজন করা হয়। র‍্যালিটি শেখ কামাল ভবন থেকে শুরু হয়ে প্রশাসনিক ভবন ঘুরে আবার শেখ কামাল ভবনে এসে শেষ হয়।

র‍্যালি শেষে পথচারী, রিকসাওয়ালা সহ আগত সকলের মাঝে সিদ্ধ ডিম বিতরণ করা হয়।

পিপিবি শেকৃবি ইউনিটের প্রধান উপদেষ্টা ও পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক বেগ বলেন, " একটি নতুন প্রাণের জন্ম হয় একটি ডিম থেকে। অর্থ্যাৎ, একটি প্রাণের জন্য যে সকল পুষ্টি উপাদান দরকার তার সবই রয়েছে ডিমের মধ্যে৷ আমরা দেখেছি, পৃথিবীর যে সকল দেশে মাথাপিছু ডিম বেশি  খাওয়া হয়, ওই সকল জাতি তত বেশি মেধাবী হয়ে থাকে"।

অধ্যাপক ড. মোঃ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, "একটি ডিমে দেহের প্রয়োজনীয় প্রতিটি উপাদান থাকে। মাথার চুলের যে বৃদ্ধি ঘটে সেটা প্রোটিন, এ প্রোটিন আসে ডিম থেকে। আমাদের যে দৃষ্টি শক্তি, যা চোখের সাথে জড়িত। ডিমের মধ্যে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য সরাসরি জড়িত। আমাদের দৃষ্টি শক্তিকে ঠিকঠাক করতে হলে আমাদের প্রতিদিন ডিম খেতে হবে। শুধু তাই নয়, আমাদের দেহের দৈহিক বৃদ্ধি যেমন: অঙ্গের বৃদ্ধি, চুলের বৃদ্ধি, নখের বৃদ্ধির জন্যও ডিমের ভূমিকা অনেক"।

পিপিবি শেকৃবি ইউনিটের উপদেষ্টা ও মেডিসিন এন্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম বলেন, " ডিম দিবস পালনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনসাধারণকে ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতন করা। ডিম নিয়ে বিভিন্ন গুজব বিভিন্ন সময়ে ছড়ানো হয়েছে এবং হচ্ছে। সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত এ সকল গুজব প্রতিরোধে জনগণকে ডিমের পুষ্টিগুণ নিয়ে জানানো এবং জনসচেতনতা গড়ে তোলা।

পিপিবি শেকৃবি ইউনিটের উপদেষ্টা ও এনিম্যাল প্রোডাকশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, "প্রতিবছরের ন্যায় এবারো পিপিবি এবং এএসভিএম অনুষদের উদ্যোগে ডিম দিবস পালন করা হয়েছে। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে এ ধরনের আয়োজন করে বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করতে পারবো।

পিপিবি'র কোর টিম সদস্য এবং ইভোনিক বাংলাদেশ লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাঃ সঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, " আমি অত্যন্ত আনন্দিত এ ধরনের কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে পেরে। পিপিবি ডিম নিয়ে অনলাইনে ও অফলাইনে যে কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে আসছে এতে জনগোষ্ঠীর বৃহৎ একটি অংশের মাঝে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন ডিম ও ব্রয়লারের জেলাভিত্তিক দাম পিপিবি'র পেইজে শেয়ার করার ফলে ডিমের দামের মধ্যে একটা স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে"।



র‍্যালি ও ডিম বিতরণ কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন এনাটমি এন্ড হিস্টলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রাসেল, সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ মোশাররফ হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল মাসুম, এনিম্যাল নিউট্রিশন এন্ড জেনেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. মোফাচ্ছারা আক্তার রিমি, ডেইরি সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ড. এমএ মান্নান, পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাকসুদা বেগম, সার্জারি এন্ড থেরিওজেনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল হক মামুন, সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোসাঃ নুসরাত জাহান, মেডিসিন এন্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ দেলোয়ার হোসেন।
 
পিপিবি কোর টিম সদস্য ডাঃ আবদুর রহমান রাফি, পিপিবি শেকৃবি শাখার কো-লিডার ডাঃ রূপ কুমার, ইসমাইল হোসেন ভূঁইয়া, পিপিবি শেকৃবি শাখার অন্যান্য সদস্যরা এবং শেকৃবির এএসভিএম অনুষদের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত থেকে কর্মসূচী পালনে মহযোগিতা করেন।

উল্লেখ্য, ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষ জাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। বর্তমানে এই সংস্থার সদস্যসংখ্যা ৮০। সংস্থাটি প্রাণিজ আমিষের চাহদিা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করে, যা পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত প্রভৃতি দেশসহ সারা বিশ্বের ৪০টি দেশে পালিত হয় ‘বিশ্ব ডিম দিবস’, যার পরিধি ও ব্যাপ্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর সাড়ম্বরপূর্ণভাবে পিপিবি ডিম দিবস পালনে করে আসছে।