কৃষির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে-মো: মেসবাহুল ইসলাম্

Category: ফোকাস Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:ঢাকায় কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন “কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও  বিতরণ ৩য় পর্যায় (১ম সংশোধিত)” প্রকল্পের ২০২১-২২ অর্থ বছরের জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৯ ডিসেম্বর রোজ বুধবার ১০.০০ ঘটিকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) অডিটরিয়াম অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কৃষিবিদ মো: মেসবাহুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো: মেসবাহুল ইসলাম বলেন, ডাল, তেল ও মসলা আমদানী করতে এদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয় তাই শষ্য বিন্যাসে পরিবর্তন এনে, কৃষি যান্ত্রিকিকরণ এর মাধ্যমে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এছাড়াও ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। কৃষির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এস.ডি.জি এবং ২০৪১ সালের জন্য যে লক্ষমাত্রা দেয়া আছে তা বাস্তবায়ন করার লক্ষে কাজ করার জন্য তিনি সবাইকে আহবান জানান।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন জনাব ড. মোঃ আব্দুর রৌফ, অতিরিক্ত সচিব, জনাব হাসানুজ্জামান কল্লোল অতিরিক্ত সচিব কৃষি মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান ও প্রকল্পের মূল কার্যক্রম উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক, কৃষিবিদ খায়রুল আলম প্রিন্স।  সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ মো: আসাদুল্লাহ, মহাপরিচালক, কৃষি সসম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা।

স্বাগত বক্তব্য ও প্রকল্প উপস্থাপনায় প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ মো: খায়রুল আলম বলেন উল্লিখিত প্রকল্পটি সমগ্র বাংলাদেশের ৬৪টি  জেলার সকল উপজেলার ৪৫০০ ইউনিয়নে ওয়ার্ড ভিত্তিক ‘বীজ এসএমই (SME)’ সৃষ্টির মাধ্যমে  ডাল, তেল ও মসলার মানসম্মত বীজ উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, টেকসই  উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও মৌচাষ সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে  গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দরিদ্র নারীদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সারাদেশে ৪৫০০ টি বীজ এসএমই (SME)-এর অধীনে ০৪ বছরে ডাল, তেল ও মসলা জাতীয় বিভিন্ন ফসলের মোট ৩৫,৯১৫ টি বীজ উৎপাদন ব্লক স্থাপন করা হয়েছে।।  প্রতিটি ব্লকের আয়তন ০১ একর ও ৫০ শতক ( আদা, হলুদ, ধনিয়া,  কালোজিরা)। এ পর্যন্ত ৪ বছরে মোট ২৫৬টি নতুন জাতের ট্রায়াল প্লট স্থাপন করা হয়েছে। বীজের গুণগতমান বজায় রাখতে এসসিএ এসএমইদেরকে পরামর্শ ও বীজ প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করছে। এ পর্যন্ত মোট ৯৪৮৩.১১ মে.ট.বীজ উৎপাদন ও বিতরণ/বিপণন করা হয়েছে।



প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পাধীন (জুন ২০২২ পর্যন্ত) সময়ে প্রায় ১১৯৬৫ মে.টন উন্নতমানের বীজ উৎপাদিত হবে। ফসলের পরাগায়ন কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য আগ্রহী বীজ এসএমইকে মোট ২০০০ টি উন্নতমানের মৌবাক্স, মধু এক্সট্রাক্টর,এক্সেসরিজ এবং মৌ-কলোনী সরবরাহ করা হয়েছে। এ সব বক্স থেকে প্রতি বছর ৪০ মে. টন করে অর্থাৎ প্রকল্পাধীন সময়ে  প্রায় ১৬০ মে. টন উৎকৃষ্ট মানের মধু উৎপাদিত হবে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭৫ মে.ট.মধু উৎপন্ন হয়েছে।এসএমই ও তার  সদস্যরা এই মৌ পালনের সাথে সংযুক্ত রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে কৃষি সসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো: আসাদুল্লাহ বলেন এদেশে ভালো বীজের অভাব রয়েছে। এছাড়া ডাল, তেল ও মসলা ফসলের আবাদ করার জন্য জমি বাড়ানো সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ভালো জমিতে ভালো বীজের মাধ্যমে ডাল, তেল ও মসলা ফসলের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। তিনি বলেন এ বছর প্রথম বারের মত কৃষকদের কাছ থেকে বীজ কিনে প্রনোদনা হিসেবে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এছাড়াও বীজের মান যাতে ভালো হয় সে বিষয়ে সবাইকে উদ্যোগী হতে বলেন।

কারিগরি সেশন পরিচালনা করেন অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং এর পরিচালক জনাব কৃষিবিদ মো: বেনজীর আলম। উক্ত কর্মশালায় কারিগরি সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সীর প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বিজ্ঞানীগণ ডাল, তেল ও মসলা জাতীয় ফসলের বীজ উৎপাদন প্রযুক্তির ব্যবহার, সম্প্রসারণ ও সম্ভাবনার দিকগুলো আলোকপাত করেন।