বাকৃবি সবসময়ই সবার থেকে এগিয়ে: কৃষিমন্ত্রী

Category: ফোকাস Written by agrilife24

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান নেতা ও বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। ক্যাম্পাস জীবনের হাজারও অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বন্ধু নাজমুল এবং অন্যান্য শহীদদের স্মৃতির কথা আজও মনে পড়ে তাঁর।  

তিনি বলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনেক। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি গবেষণার মান সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। ইলিশ, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, জলমগ্নতা ও লবণাক্ত সহিঞ্চু ধানের জীবন রহস্য আবিষ্কারসহ হাজারো গবেষণার সাফল্য রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের, যা বাংলাদেশের খুব কম বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বমানের গ্রাজুয়েট তৈরি করছে বাকৃবি। বাংলাদেশে কৃষির যত সাফল্য তার বেশির ভাগই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট ও গবেষকদের মাধ্যমে এসেছে। এই গবেষকরা কর্মক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছেন সারাদেশে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যিকার অর্থেই অনেক এগিয়ে। এখন এ বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণ করে নতুন নতুন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত শিক্ষক সন্ধ্যা অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়ি পাকিস্তানী শত্রু বাহিনীদের বিরুদ্ধে। এটিও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার জন্য গর্বের। শিক্ষক সমিতির আয়োজনে ওই শিক্ষক সন্ধ্যায় দীর্ঘক্ষণ বক্তব্য দেওয়ার কালে তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাড়াবে ৪ থেকে ৫ হাজার ডলার। বর্তমান সরকার  সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে। লক্ষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরিত হবে বলেও জানান তিঁনি।

মন্ত্রী বলেন, দেশে আরো শিল্প কারখানা তৈরি করা হবে, এর ফলে ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের কোন সমস্যা  হবে না। বিশ্বের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো হল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। যেখানে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। মাছ মাংস দুধ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে প্রশংসনীয় অবস্থানে আছে। তবে কৃষিকে আধুনিকীকরণ বাণিজ্যিকীকরণ করার জন্য এবং বিভিন্ন খাবারের প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য আমাদেরকে আরো কাজ করে যেতে হবে। বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ শিক্ষকদের বিনীতভাবে অনুরোধ জানান কিভাবে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আরো দক্ষ করে তোলা যায় সে জ্ঞান দেওয়ার জন্য ।

ওই অনুষ্ঠানে বছর জুড়ে বাকৃবির যেসব শিক্ষকরা গবেষণায় অবদান রেখেছে শিক্ষক সমিতি তাঁদের ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে মূল্যায়িত করে। তিঁনি তাদের এই উদ্যোগগুলোকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এই উদ্যোগগুলো শিক্ষকদের উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে, তাদেরকে আরও দক্ষ করতে, ভালো শিক্ষক হিসেবে গড়ে তুলতে উৎসাহিত করবে। আর এই ধারা শিক্ষকদের প্রতিযোগিতামূলক কাজের মনোভাব তৈরিতেও সাহায্য করবে। বাকৃবি পিএইচডি ও মাস্টার্স  প্রোগামের জন্য শিক্ষকেরা কোর্স সিস্টেমে গিয়েছেন। এ উদ্যোগকে তিনি ব্যক্তিগত ও কৃষিবিদ সমাজের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার মান আরো কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কাজ করতে হবে। এছাড়াও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে শিক্ষকদের প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও তিনি জানান।

বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সুবাস চন্দ্র দাসের সঞ্চালনায় ও সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে ওই শিক্ষক সন্ধ্যায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান।