বাকৃবি চত্বরে শেষ বারের মতো এলেন বদিউজ্জামান বাদশা

Category: ফোকাস Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:প্রিয় প্রাঙ্গণ, প্রিয় ক্যাম্পাস বাকৃবি চত্বর সোমবার বেলা তখন একটা। হালকা শীতের আকাশ, মৃদুমন্দ হাওয়া। প্রতিদিনের মতই বাকৃবি চত্ত্বরে কৃষিবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা- কর্মচারীসহ বিভিন্ন মহলের অসংখ্য মুখ সামনে সমবেত। কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ নয়। নয় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান। সমবেত সবার অপেক্ষা সকল কৃষিবিদদের প্রিয় নেতা মরহুম কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা-এর জন্য। নিজ এলাকা শেরপুরের নালিতাবাড়িতে চিরনিদ্রায় শায়িত হবার আগে সবার সাথে প্রিয় ক্যাম্পাসে শেষ দেখা করতে এসেছেন তিনি।

লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্বরে উঠলেন। আগে দেখা হলে হাসি মুখে সবার সাথে যেমনটা কুশল বিনিময় করতেন, এবার আর তা করলেন না তিনি। বিষন্ন মনে সাদা কাপড়ে নিজেকে আড়াল করে একদমই চুপ থাকলেন বদিউজ্জামান বাদশা। হাস্যোজ্জ্বল তেজোদ্দীপ্ত এমন একটি প্রাণের হঠাৎ নিশ্চুপ নিরবতায় অপেক্ষামান মানুষগুলো তখন অশ্রুসিক্ত। শেষ বারের মতো বাকৃবিতে বেড়াতে এসে সবাইকে কাঁদালেন তিনি।

এ কান্না ছিল অত্যন্ত মেধাবী, প্রানবন্ত গতিশীল, দৃপ্ত নির্ভীক একজন নেতাকে বিদায় জানানোর। এরকম শোকাবহ পরিবেশে চিরদিনের জন্য বিদায় জানান সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব এ কে এম খালিদ বাবু, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. একেএম জাকির হোসেন, প্রক্টর, কৃষিবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা- কর্মচারী এবং ময়মনসিংহের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসীসহ সর্বস্তরের মানুষ। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্বরে আজ ২২ শে নভেম্বরবাদ জোহর মরহুমের তৃতীয় নামাজে জানাযায় অংশ নিয়ে তার শুভাকাংখীরা সকলে মরহুমের রূহের মাগফেরাৎ কামনা করেন।

আকস্মিক মরনব্যাধি প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার (২২ নভেম্বর) ভোর রাত্রি ৩:০০ টায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী এক পুত্র ও এক কন্যা ও অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

মরহুম কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া দেশের এক  প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াতেন কৃষির উন্নয়ন, কৃষিবিদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য। পড়াশোনা জানা স্মার্ট এ অমায়িক সংগঠক চমৎকার বক্তৃতা করতেন। তাঁর এই অসাধারণ বাগ্মিতা তাঁকে এনে দিয়েছিল এক গগনচুম্বী জনপ্রিয়তা। হৃদয় নিংড়ানো কথামালার মজবুত গাঁথুনি দিয়ে তার বক্তৃতা সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো হয়ে শুনতো।