লাম্পি স্কিন ডিজিজ নিয়ন্ত্রণে করণীয় তুলে ধরলো এসিআই এনিম্যাল হেলথ্

Category: ফোকাস Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:সাম্প্রতিক সময়ে ছোট-বড় সব ধরনের ডেইরি খামারীদের নিকট এক আতঙ্কের নাম লাম্পি স্কিন ডিজিজ। দেশে প্রায় সব জায়গায় এলএসডি আক্রান্ত গরুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এলএসডি গরুর জন্য একটা ভয়ংকর ভাইরাস বাহীত চর্মরোগ যা খামারের ক্ষতির কারণ। খামারীদের মাঝে বাংলাদেশে লাম্পি স্কিন ডিজিজের ভ্যাক্সিন সরবরাহের মাধ্যমে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশের বৃহত্তম এগ্রি বিজনেস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এসিআই লিমিটেড (এনিম্যাল হেলথ ডিভিশন)। এসিআই এনিম্যাল হেলথ বিশ্ববিখ্যাত Bovivax LSD-N Vaccine আমদানি করেছে যার কার্যকারিতা বিশ্বনন্দিত।

এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ নিয়ন্ত্রণে করণীয় ও Bovivax LSD-N Vaccine এর কার্যকারিতা সম্মানিত খামারিবৃন্দ, ভেটেরিনারিয়ান, ব্যবসায়ীগন সহ প্রাণিসম্পদের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার সামনে তুলে ধরতে দেশ সেরা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে Agrovet Biosolution কর্তৃক আয়োজন করা হলো “Unlocking the Problem of Lumpy Skin Disease in Bangladesh” এক ফেসবুক লাইভ। শনিবার (২৯ মে) রাত্রি ৮:৩০ থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত এ লাইভে আলোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞগণ।

অনুষ্ঠানে এসিআই এনিম্যাল হেলথ্-এর ডেপুটি এক্সিকিউটিব ডাইরেক্টর জনাব শাহীন শাহ উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত বা মৃত্যুর হারের চেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো আক্রান্ত গাভীর দুধ উৎপাদন বন্ধ বা একেবারেই কমে যাওয়া এবং দীর্ঘদিন চিকিৎসা করার কারণে চিকিৎসা ব্যয় নাগালের বাইরে চলে যায় ফলে খামারির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই হুমকিতে পড়ে যাচ্ছে। তিনি ফোনে এগ্রিলাইফকে বলেন, সামনে কোরবানি ঈদে সুস্থ সবল পশু অপরিহার্য। সেইক্ষেত্রে এই ভ্যাক্সিন প্রয়োগে গরু যেমন নিরাপদ ও সুস্থ থাকবে ঠিক তেমনি মাংস নিরাপদ থাকবে। কেননা মানবদেহের পুষ্টির জন্য নিরাপদ খাদ্য প্রয়োজন, সেইক্ষেত্রে তাদের এই ভ্যাক্সিনটি উপকারে আসবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, তাদের মুল উদ্দেশ্য হলো প্রাণিসম্পদখাতকে বিশেষ করে ডেইরি শিল্পকে বানিজ্যিকভাবে লাভজনক করা। গরুর মাংসের পাশাপাশি গরুর চামড়াও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধ করা গেলে চামড়ার গুনগতমান ভাল থাকে। এই সব দিক বিবেচনা করে তারা মাঠ পর্যায়ে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

কোম্পানীর চিফ টেকনিক্যাল এডভাইজার ডাঃ মোঃ এ ছালেক বলেন, এই ভ্যাকসিনটি জিএমপি স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তৈরি। তিনি বলেন বাংলাদেশের দুধ মাংসের উৎপাদন যথেষ্ট বেড়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে সরকারি-বেসরকারি এবং দেশের ছোট বড় সকল খামারিদের সহযোগিতার কারণে। এই ভ্যাকসিনটি লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে গবাদিপশুকে দীর্ঘদিন সুরক্ষা রাখতে সক্ষম যোগ করেন ডাঃ মোঃ এ ছালেক।



অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক বিএলআরআই এর সাবেক সিএসও ড. মোঃ গিয়াসউদ্দিন বলেন, ভ্যাক্সিনের বিকল্প আসলে কিছু নেই এজন্য মোকাবেলা করতে অবশ্যই ভ্যাক্সিন ব্যবহার করতে হবে। তিনি চমৎকার প্রেজেন্টেশেনের মাধ্যমে রোগটির লক্ষণ, প্রতিরোধ, প্রতিকার, চিকিৎসা প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করেন।

এসিআই এনিম্যাল হেলথ এর বিজনেস ম্যানেজার ডাঃ মোঃ মঈনুল ইসলাম বলেন, Bovivax LSD- N Vaccine দেশের সকল জায়গায় পৌছানো হয়েছে। যার ফলে যেকোনো খামারীগন চাইলে খুব সহজেই এই ভ্যাক্সিন পেতে পারবে। তিনি বলেন এ ভ্যাকসিন জিএমপি এর মাধ্যমে তৈরি। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা অত্যন্ত ছোট সেজন্য তারা খুব ছোট মাত্র ১০ ডোজের এবং সাশ্রয়ী মূল্যের ভ্যাকসিন বাজারজাত করছে। মাত্র ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ব্যয়ে একটি গরুকে সুরক্ষা প্রদান সম্ভব হবে। Bovivax LSD- N Vaccine গোট পক্স প্রায় ১৩ গুণ বেশি শক্তিশালী হওয়ায় এর সুরক্ষা ক্ষমতা বেশি বলেন ডাঃ মোঃ মঈনুল।

ডেয়রী প্র্যাক্টিশনার ও প্রডাক্ট ম্যানেজার, এসিআই এনিম্যাল হেলথ ডাঃ মোঃ ফয়সাল ফেরদৌস বলেন, আমাদের দেশের ডেইরি খামারিরা অধিকাংশই ট্রিটমেন্ট নির্ভর। আমাদের তাদেরকে সচেতন করতে হবে রোগ প্রতিরোধ করার ব্যাপারে তাহলে খামারকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। লাম্পি স্কিন ডিজিজ একটা অসুস্থ পশু থেকে অন্য সুস্থ পশুতে ছড়িয়ে যেতে পারে কাজেই কোয়ারেন্টাইনের ব্যাপারগুলি সম্পর্কে খামারীদের সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।



এসিআই এনিম্যাল হেলথ্ এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কোয়ালিটি পণ্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে খামারিদের হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া পরিচালক, সেলস, ডাঃ মোঃ আমজাদ হোসেন বলেন, Bovivax LSD- N Vaccine ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত। লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধের জন্যই তৈরি করা এ ভ্যাকসিনটির মান ঠিক রাখার জন্য যে জিনিসটি জরুরি সেটি হল কুলচেইন মেইনটেন। প্রতিটি স্তরেই তারা এই জিনিসটা মেইনটেন করে থাকেন অর্থাৎ এয়ারপোর্ট এ আসা থেকে শুরু করে খামারের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই তারা এটা করে থাকেন। তাদের সেন্ট্রাল ডিপো থেকে শুরু করে সারা দেশে তাদের রয়েছে ১৭ টি ডিষ্ট্রিবিউশন ডিপোর থেকে কুল ভ্যানের মাধ্যমে এটি ডিস্ট্রিবিউশন করে থাকেন। প্রতিটি ডিপোতে তাদের জেনারেটর রয়েছে এবং ভ্যাকসিন বিপণনের সাথে জড়িতরা সম্পূর্ণ পৃথক এবং ৪০ জন ভেটেরিনিরানিয়ানের সমন্বয়ে রয়েছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একদল দক্ষ কর্মী।

ডাঃ হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক, মহাপরিচালক (অবঃ), ডিএলএস ও চিফ এডভাইজর, এসিআই এনিম্যাল হেলথ বলেন, ভ্যাক্সিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই সুস্থ পশুতে প্রয়োগ করতে হবে এবং অসুস্থ পশুর ক্ষেত্রে সুস্থ হওয়ার অন্তত ২৮ দিন পরে ভ্যাক্সিন প্রয়োগ করতে হবে।

সবশেষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওয়েবিনারের সমাপ্তি টানেন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সঞ্চালনা করেন ডা:মোসাব্বির হোসেন।