কৃষি বিজ্ঞানীদের অধিক উৎপাদনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবনের আহবান জানালেন কৃষিমন্ত্রী

বাকৃবি প্রতিনিধি:কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তবে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখা বড় চালেঞ্জ। আগে মাথাপিছু আবাদী জমির পরিমাণ ছিল প্রায় ২৮শতক। বর্তমানে তা কমে ১০ শতকে দাঁড়িয়েছে। মাথাপিছু এই ১০ শতক  জমি থেকেই সাড়ে ১৬কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দিতে হবে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি বিজ্ঞানীদের অংশীদার হতে হবে। এই সংগ্রামে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে কৃষিবিজ্ঞানীদের সারথী হতে হবে। ফসলের অধিক উৎপাদনশীল উন্নত জাত, উন্নত হাঁস-মুরগী ও গরু-ছাগলের জাত এবং উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে জাতিকে দিক নির্দেশনা দিতে হবে। তাহলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব হবে।

শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালার উদ্ভোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘বাংলাদেশে করোনার প্রভাব মোকাবিলায় কৃষি বিষয়ক গবেষণার রুপান্তরকরণ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপি ওই কর্মশালাটির উদ্বোধন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নূর আলী খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি যুক্ত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) অধ্যাপক ড. শামসুল আলম এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান।
কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এইচ-ইনডেক্সের ওপর ভিত্তি করে সেরা ১৭ গবেষককে গেøাবাল রিসার্চ ইমপ্যাক্ট রিকগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২১ প্রদান করা হয়। এছাড়াও কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য খামার পর্যায়ের ৬ জন উদ্যোক্তাকে ‘প্রফেসর ড. আশরাফ আলী খান স্মৃতি কৃষি পুরস্কার-২০২১’ প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর মাঝে শেষ করা ৪৭৭টি প্রকল্পের ফলাফল কর্মশালার দ্বিতীয় দিন আজ রোববার ১৯টি প্যারালাল সেশনে উপস্থাপতিত হবে। ১৯৮৪ সনের ৩০ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হওয়া বাউরেস এপর্যন্ত ২৮২০টি গবেষণা প্রকল্পের কাজ শেষ করেছে। বর্তমানে পাঁচ শতাধিক গবেষণা প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষির বৃহৎ ভ‚মিকা রয়েছে। দেশের ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনামতে কৃষির মোট প্রবৃদ্ধি চার শতায়শ প্রয়োজন হলেও বর্তমানে আছে ৩.২ শতাংশ। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে জাতিসংঘ দূর্ভিক্ষের আশংকা করলেও আমাদের দেশের কৃষি দ্রব্যমূল্যস্ফীতি সীমাতিক্রম পর্যন্ত করেনি। এটা কিস্তু বড় সফলতা আমাদের জন্য। তবে কৃষির অর্থনৈতিক স্থীতিশীলতা ছাড়া জাতীয় অর্থনৈতিক স্থীতিশীলতা সম্ভব নয়। আর এজন্য কৃষিতে ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন। কৃষিখাত বাজেটের ৫ শতাংশ কৃষি গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে যার পুরোটাই ব্যয় হওয়া প্রয়োজন।