গিনেস বুকে স্থান করে নিল ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) এক  ইমেইল বার্তায় এ খবর জানার পর সারা দেশের মতো বগুড়াবাসীদের মাঝে আনন্দের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। এর আগে চীনে শস্যচিত্র ছিল ৭৫ বিঘা জমিতে আর এখানে ১০০ বিঘা জমিতে। কোনো কৃত্রিমতা নেই। ১২শ' বর্গমিটার জমিতে বঙ্গবন্ধু শস্যচিত্র ফুটিয়ে তুলে গিনেস বুকে স্থান করে নিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ''ক্রপ ফিল্ড মোজাইক'' ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ফুটে তুলতে গত ২৯ জানুয়ারি শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে (১২শ’ বর্গমিটার) চীন থেকে আনা ডিপ ভায়োলেট রঙের হাইব্রিড ও দেশের ডিপ গ্রিন ধানের চারা রোপণ করা হয়। এখন সেই চারাগুলো বড় হয়ে তাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখা যাচ্ছে।

শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে ন্যাশনাল অ্যাগ্রোকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিকৃতি তৈরির কাজ শুরু করে। আয়োজকরা জানান, শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান দিতে গত বছর থেকে কাজ শুরু হয়। চীন থেকে আমদানি করা হয় বেগুনি রঙের (এফ-১) ও দেশি সবুজ হাইব্রিড ধানের চারা। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ জন নারী শ্রমিক কাজ করেছেন। তাদের সঙ্গে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন পুরুষ শ্রমিক ছিলেন।

এ শস্যচিত্রের জন্য স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে সাত মাসের জন্য ১০০ বিঘা জমি ইজারা নেওয়া হয়েছে। ফসল উঠার পর মে মাসের দিকে জমিগুলো ফেরত দেওয়া হবে বলে আয়োজকরা জানান।

ন্যাশনাল এগ্রোকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ডেপুটি হেড অব অপারেশন এবং শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু প্রকল্পের হেড অব অপারেশন কৃষিবিদ মো. আল-আমিন জানান, এ প্রকল্পে তারা সার্বিক সহযোগিতা ও অর্থায়ন করেছেন। তারা চীনের চং চিং জং ই সিড কোম্পানি লিমিটেড থেকে এ ধান বীজ সংগ্রহ করেন। কারিগরি সহায়তা দেন ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র এগ্রোনমিস্ট মি. লিং জিয়া হু।

কৃষিবিদ মো. আল-আমিন আরও জানান, গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের দুই প্রতিনিধি গত ৯ মার্চ পরিদর্শন শেষে রিপোর্ট দাখিল করেন। এতে সন্তুষ্ট হয়ে কর্তৃপক্ষ ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান দিয়েছেন। বিষয়টি মঙ্গলবার ইমেইল বার্তায় ন্যাশনাল অ্যাগ্রোকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের পরিচালক ইয়ালিদ বিন রহমানকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আশা করেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত দলিল চলে আসবে।

এদিকে দেশের সকল শ্রেণীর নাগরিকরা কৃষিবিদদের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের কৃষিবিদরা যে সফল তা এই সফল কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন। অভূতপূর্ব ভাস্কর্য, অনন্য শিল্পকর্ম।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শস্য চিত্রে বঙ্গবন্ধু গিনিজ বুকে স্হান পাওয়ায় কৃষিবিদদের প্রিয় নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম যুগ্ম সাধারন সম্পাদক কৃষিবিদ আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাছিম ও ন্যাশনাল অ্যাগ্রোকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমানের প্রতি অভিনন্দন জানিয়েছেন। স্বাধীনতার অর্ধশত বার্ষিকী ও মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এটি সকলের জন্য আনন্দের ও গর্বের বলে সুধীজনরা মনে করেন।