আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি:বিংশ শতাব্দীতে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যারা বিশ্বনন্দিত নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের অন্যতম। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। যা ইউনেস্কোর 'ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার'-এ অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। অন্যদিকে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে (৬ মার্চ) তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙ্গালীর বহু আকাঙ্ক্ষিত বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরামহীন সংগ্রামে অবদান রাখার জন্য তিনি বিশ্বশান্তি পরিষদের জুলিও কুরি পদকে ভূষিত হন। বিবিসি'র এক জরীপে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী নির্বাচিত হন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যখন বিভিন্নমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করতে শুরু করেন ঠিক সেই মুহূর্তে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি ও কায়েমি স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং ওই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে কতিপয় বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার হাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন।
এই মহান নেতার অবদানকে স্বীকার করে ও তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) নির্মাণ করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল। হলসূত্রে জানা যায়, হলটির নির্মান কাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালের ৩০ শে জুন। নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর মাসে। প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয় ১৯৯৯ সালের ২১ জুলাই। আর প্রথম প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ পান সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম গোলাম শাহী আলম। ১৯৯৯ সালে হলটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে আবাসিক হিসাবে ছাত্র উঠানো শুরু হয়। চার তলা বিশিষ্ট এ হল ৬০৮ জনের জন্য নির্মাণ করা হলেও বর্তমানে প্রায় ৭ শতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী রয়েছে। হলটিতে রয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক কক্ষ। রয়েছে একটি মসজিদ, একটি ডাইনিং, ক্যান্টিন, রিডিং রুম, অতিথি কক্ষ, সুইমিং পুল, শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল প্রভৃতি । বর্তমানে হলের প্রভোস্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. শংকর কুমার দাশ। হাউজ টিউটর হিসাবে আছেন মো. আহমাদুল ইসলাম, আর এ জুইস, মো. হেলাল উদ্দিন। সহকারী রেজিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. দেলোয়ার হোসেন, শেকশন অফিসার হিসাবে আছেন মো. গোলাম মোস্তফা, কৃষিবিদ নাহিদ হাসান।
হলটিতে রয়েছে শাখা ছাত্রলীগের হল কমিটি। সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন দেবপ্রিয় রায় সুস্ময়, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সৌরভ আল হাসান, সহ-সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ পিহান, সামিউর রহমান নাবিল, আবদুল্লাহ্ আল নোমান, সাব্বির হাসান দুর্জয়, রুদ্র সেন দাশ, ইহতেশামুল হক আবির, ফুয়াদ হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রিফাত আল মুক্তাদির, বাপ্পী মজুমদার, নিহাল হোসেন নাফিস, জাহিদ হাসান, মো. মামুন রানা, সাংগাঠনিক সম্পাদক হিসেবে আনোয়ারুল ইসলাম, দুর্জয় সাহা, সানোয়ার হোসেন।