রাজধানী প্রতিনিধি:বাংলাদেশের প্রাণীজ খাতের পুষ্টিপণ্য (পোল্ট্রি-মৎস্য ও ডেয়রী খাদ্য উপকরণ/মৌলিক কাঁচামাল  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে যথাযথ এনওসি গ্রহণ সাপেক্ষে আমদানি করা হয়ে থাকে। এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (আহকাব) এবং বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগ্রেডিয়েন্টস্ ইমপোর্টারস্ এন্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশন (বাফিটা) এর সদস্যভুক্ত আমদানিকারকগণ এ যাবৎকাল প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে এনওসি গ্রহণ করে ধাপে ধাপে পণ্যসমূহ আমদানি করে আসছেন।

কিন্তু হঠাৎ করে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত প্রাণীজ (পোল্ট্রি-মৎস্য ও ডেইরি) খাদ্য উপকরণ/মৌলিক কাঁচামাল সামগ্রী একক এনওসি নিয়ে এককভাবে এলসি ও আমদানী করার মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করে। যার প্রেক্ষিতে আমদানিকৃত পণ্য খালাস ব্যাহত হচ্ছে যা কোন অবস্থায় কাম্য নয়। এ ব্যাপারে গত ১৭ সেপ্টেম্বর (আহকাব)-এর সভাপতি ডা. এম নজরুল ইসলাম ও সেক্রেটারী জেনারেল ডা: মো: কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি এবং গত ২০ সেপ্টেম্বর বাফিটা-এর সভাপতি সুধীর চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করা হয়।

এসব বিষয়গুলি বিবেচনায় রেখে বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (আহকাব)-এর সভাপতি ডা. এম নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী প্রতিনিধিদল প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণী স্বাস্থ্য ও প্রশাসন পরিচালক ডা. শেখ আজিজুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং বিষয়গুলি তুলে ধরে আশু সমাধানের অনুরোধ জানান।

সাক্ষাৎকালে উভয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে পণ্য আমদানির যথাযথ এনওসি গ্রহণ, এলসি খোলা এবং অন্যান্য কর্মসম্পাদন অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমদানিকারকগণ ৬ মাস বা এক বছরের চাহিদা বিবেচনা করে পণ্য সমুহের এনওসি গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু সম্প্রতি চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কর্তৃক একই এনওসি এর আওতায় আংশিক আমদানিকৃত পণ্য ছাড়করণের ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পোল্ট্রি-মৎস্য ও ডেয়রী খাদ্য উপকরণ/মৌলিক কাঁচামাল আমদানি। যার প্রভাব পড়তে পারে ব্যবসায়ী থেকে আরম্ভ করে ভোক্তা পর্যন্ত।

আহকাব-এর সভাপতি ডা. এম নজরুল ইসলাম এগ্রিলাইফ২৪ ডটকমকে বলেন, তাদের আমদানীকৃত পণ্যসামগ্রী যথাসময়ে ছাড় না হওয়ায় সাপ্লাই চেইন ভেঙ্গে পড়ছে। এর ফলে পোল্ট্রি-মৎস্য-ডেইরি পণ্য উৎপাদন ব্যাহত হয় এছাড়া প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা ডেমারেজ গুণতে হচ্ছে আমদানীকারকদের। বন্দরের এসব ডেমারেজের অর্থ আমদানিকারকদের বৈদেশিক মুদ্রায় প্রদান করতে হয় এর ফলে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জাতি।

বর্তমানকালে প্রাণীজ প্রোটিন করোনা প্রতিরোধে মুখ্য ভূমিকা রাখে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও করোনা প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদের সার্বিক উন্নয়নে ব্যপক জোর দিয়েছেন। সরকারের এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং কাস্টম হাউস এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন ডা. নজরুল। কাজেই তিনি সংশ্লিস্ট সকলের ইতিবাচক ভুমিকা রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরো শক্তিশালী করার জোর দাবী জানান।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণী স্বাস্থ্য ও প্রশাসন পরিচালক ডা. শেখ আজিজুর রহমান উপস্থিত নেতৃবৃন্দের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং অতি দ্রুত এর সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। এসময় এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর (প্রাণী স্বাস্থ্য ও প্রশাসন)  ড: মো আবু সুফিয়ান উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে আহকাব-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট  মো: শহিদউল্লাহ্, কোষাধ্যক্ষ জনাব মোসলেহ উদ্দিন সাংগঠনিক সম্পাদক ডা: গদাধর চন্দ্র শীল, ইসি সদস্য জনাব আমিরুল ইসলাম মন্টু, জনাব আনোয়ার হোসেন, মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, হুমায়ূন আহমেদ (কবির), এমদাদুল হক প্রমুখ। বাফিটা-এর পক্ষে  ইসি মেম্বার সৈয়দ কামালুর রহমান (খোকন), মি: জয়ন্ত কুমার দেব এবং সিগমা বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহি জনাব আনোয়ার হোসেন এবং বিশিষ্ট সংগঠক ডা: মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন উপস্থিত থেকে তাদের বক্তব্য জোরালোভাবে তুলে ধরেন।