এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:কৃষি তথ্য ও প্রযুক্তি বিস্তারে কৃষিভিত্তিক সংস্থাগুলো আরো নিবিড়ভাবে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কিভাবে কাজ করতে পারে, পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ সংস্থাগুলোর প্রত্যাশা কি? এসব নিয়ে ০৭ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১০:০০ টায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বার্ক) কনফারেন্স রুমে "কৃষি তথ্য বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা"-শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এ কর্মশালার আয়োজন করে কৃষি তথ্য সার্ভিস।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) উইং জনাব সৈয়দ আহাম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসিন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, জয়দেবপুর, গাজীপুর-এর মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউ-এর মহাপরিচালক ড. মোঃ মনজুরুল আলম।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীম রেজা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের উপপরিচালক (গণ যোগাযোগ) কৃষিবিদ মো: রেজাউল করিম।
কর্মশালায় জানানো হয় কৃষি এমন একটি একক খাত যার সঙ্গে প্রত্যেক মানুষই কোনো না কোনভাবে জড়িত। স্বাধীনতার সময় আমাদের সাড়ে সাত কোটি জনসংখ্যা থাকার পরও খাদ্য ঘাটতি ছিল। অথচ বর্তমানে ষোল কেটির ওপর মানুষ হওয়ার সত্বেও আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং আমরা খাদ্য রপ্তানির স্বপ্ন দেখছি এবং শুরু করেছি। নানা সীমাবদ্ধতা স্বত্বেও বিশাল জনগোষ্ঠির খাদ্য নিরাপত্তার বলয়টি সুসংহত রাখতে বিষ্ময়কর ভূমিকা রাখছে আমাদের কৃষি। এর পেছনে বর্তমান সরকারের সময়োপযোগি ও কার্যকর নীতি, পদক্ষেপ প্রধানতম ভূমিকা রেখে চলেছে। সেই সাথে কৃষক, কৃষিকর্মী, বিজ্ঞানীসহ সংশ্লিষ্ট সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে খোরপোষ কৃষি থেকে আজ আমরা খাদ্যে উদ্ভৃত্তের দেশ নয় বরং খাদ্য রপ্তানির দেশে পরিনত হয়েছি। বাংলাদেশের কৃষি আজ বিশ্বের কাছে দৃষ্টান্ত। উৎপাদনের এই ধারাবাহিকতাকে আমাদের টেকসইরূপে পরিনত করতে হবে।
গণমাধ্যম ও তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত বিকাশমান এই সময়ে কৃষি উন্নয়নের জন্য তথ্য চাহিদাপূরণে গণমাধ্যমে রয়েছে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। গণমাধ্যম তৃর্নমূল পর্যায়ের কৃষি সমস্যা, সম্ভবনা ও সাফল্য মুহূর্তের মধ্যে সম্প্রসারিত করে নীতিনির্ধারকসহ সংশ্লিষ্ট উপকারভোগীদের কাছে করনীয় বার্তা পৌছে দিচ্ছে। উৎপাদনকারী ও ভোক্তারমধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে, বাজার তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তিতে, দুর্যোগে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে, সমসাময়িক বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে গণমাধ্যম কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
মূলধারার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমগুলোর পাশাপাশি এখন নতুন ধারার বিভিন্ন ধরণের সামাজিক গণমাধ্যম, কমিউনিটি রেডিও-এসবও তথ্য বিস্তারে যথেষ্ট সমাদৃত হচ্ছে। গণমাধ্যমগুলো যেমন কৃষি তথ্য বিস্তারে এগিয়ে এসেছে তেমনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতাও লক্ষ করা যাচ্ছে। মাঝে মাঝে প্রযুক্তিগত তথ্য বিভ্রাট কৃষকের জন্য বিভ্রান্তিও সৃষ্টি করছে। তাই সঠিক কৃষি তথ্য প্রচারের একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলার কৃষি। কৃষি উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সম্প্রসারণ বিভাগ, কৃষক, কৃষিকর্মীর সাথে গণমাধ্যমগুলোর কার্যকর মেলবন্ধনই পারে কৃষির বহুমুখী চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে টেকসই কৃষি উন্নয়ন নিশ্চিত করতে।
কর্মশালায় কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধীনস্ত সংস্থার প্রধানগণ, ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট, অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।