কৃষিবিদ মো. আবু সায়েম:ইন্দো-গঙ্গা সমতল ভুমিতে কৃষি খামার ব্যবস্থাপনা দিন দিন শ্রমিক সংকট, জৈব পদার্থের পরিমাণ কমে মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস, ভূ-গর্ভস্থ পানির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে নি:শেষ হওয়া, প্রাকৃতিক সম্পদের স্বল্পতা ইত্যাদি নতুন নতুন সমস্যা ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকিপূর্ণ করতে পারে।

গত ২৫ জুন রংপুর আরডিআরএস বেগম রোকেয়া অডিটরিয়ামে অষ্ট্রেলিয়ার এ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়রের আয়োজনে অনুষ্ঠিত Happy Seeder/Zero Tillage Summit Workshop-এ কৃষি বিশেষজ্ঞগণ এসব মতামত প্রকাশ করেন। কর্মশালার শুভ উদ্বোধন করেন বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)-এর চেয়ারম্যান ড. মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী।

অন্যান্য অতিথিদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহ আলম, দিনাজপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল ওয়াজেদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল হোসেন প্রমুখ।

ইন্দো-গঙ্গা সমতল ভুমিতে কৃষিযন্ত্র ব্যবহার করে শুণ্য কর্ষণের মাধ্যমে ধান-গম চাষে উৎসাহিত করতে বর্তমান অবস্থা, বাঁধাসমূহ এবং ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়া এ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. এডাম লচ এবং ড. জে কামিনস। এছাড়া তারা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের পরামর্শ প্রদানের লক্ষে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

ড. মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী বলেন বাংলাদেশে কৃষিক্ষেত্রে দ্রুত যান্ত্রিকীকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে যন্ত্রগুলো বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটির উপযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া তিনি যন্ত্র চালকদের চালনাসহ হালকা মেরামতের ওপর প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

কৃষি প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল হোসেন তার বক্তব্যে বলেন যন্ত্রপাতিগুলো ত্রুটি হলে কোথায় যাবে কিংবা কোথায় বিভিন্ন ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ পাওয়া যাবে তার দ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য তিনি সরকারি-বেসরকারি বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) মডেলে জেলা উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষপ্রাপ্ত মেকানিকসহ ওয়ার্কসপ তৈরি করতে পরামর্শ প্রদান করেন।

কর্মশালায় শুণ্য কর্ষণ উপযোগী যন্ত্রপাতি ব্যবহারকারী কৃষক, কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী স্বত্ত্বাধিকারী, সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ প্রায় ৩০জন অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন আরডিআরএস বাংলাদেশের সমন্বয়কারী (কৃষি ও পরিবেশ) মো. মামুনুর রশিদ।