বঙ্গবন্ধুর কৃষি উন্নয়ন ভাবনা

অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান:তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের ছোট নদী বাইগার তীরবর্তী টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। গ্রামীণ সচ্ছল পরিবারে জন্ম নেয়া অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন তিনি। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের শেখ পরিবার আলোকিত করে তাঁর জন্ম হয়েছিল। সেই সময়ের বাবা-মা এর আদরের ধন ছোট্ট ’খোকা'ই পরবর্তীতে হয়ে উলেন বিশ্ব নেতা, মহান স্বাধীন দেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির পিতা এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

স্কুল জীবনেই মানুষের দুঃখ-বেদনা, অভাব-অভিযোগ বঙ্গবন্ধুকে ব্যথিত করত, একবার এক স্কুল বন্ধুর জামা নাই দেখে নিজের জামা তাকে গিয়ে শুধু গেঞ্জি পরে বাড়ি ফিরলেন তিনি। দুর্ভিক্ষের সময় একবার নিজেদের গোলার ধান বুভুক্ষু মানুষের মাঝে বিতরণ কনে খোকা। তাঁর বাবা তকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে খোকা বলেছিল, মানুষের কষ্ট তাঁর সহ্য হয় না। সহপাঠীদের কষ্ট লাগবে বিধায় সপ্তম শ্রেণির থাকার সময় ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জ সফররত অবিভক্ত বাংলার মুখ্য মন্ত্রী এ কে ফজলুল হক এবং খাদ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সামনে নির্ভয়ে হোস্টেলের ছাদ মেরামতের দাবী তুলেন তিনি। স্কুল জীবনে তিনি ছিলেন সবার প্রিয় 'মিয়া ভাই'। লম্বা ছিপছিপে গড়নের বঙ্গবন্ধু স্কুল জীবনে ছিলেন ফুটবল খেলোয়ার ও দলের ক্যান্টেন। ভাল ভলিবলও খেলতেন তিনি।

ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। তিনি প্রথমে গোপালগঞ্জ ও পরবর্তীতে কলকাতায় ছাত্রদের সংগঠিত করতে শুরু করেন। হোসেন শহীন সোহরাওয়ার্দীর মাধ্যমে তার রাজনীতির হাতেখড়ি। তিনি কখনওই সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন ছিলেন না। তিনি সবসময় সম্প্রদায়িক সহিংসতা বিরোধী ছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। তিনি তাঁর দল আওয়ামী লীগকে ১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী করেন। সেসময় নির্বাচনী প্রচারনায় বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের ছয় দফা এবং ছাত্র সমাজের ১১ দফার দাবিতে জনগণের ভোট চান। জনগণ সেসময় তার প্রতি বিপুল সমর্থন নেয় এবং আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করে। বঙ্গবন্ধুর নের্তৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন লাভ করে।  তাঁর এই অর্জন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের অন্যতম প্রেক্ষাপট রচনা করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তিনি এক ঐতিহাসিক ভাষণে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে ঘোষণা করেন, 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতা সংগ্রাম।'  ঐ সংগ্রামের জন্য তিনি জনগণকে 'যা কিছু আছে তাই নিয়ে' প্রস্তুত থাকতে বলেন। তিনি ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। নির্বাচিত গলপ্রতিনিধিরা ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত কলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করেন। তাঁরা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করেন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা কনে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন হলে শেখ মুজিব পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১০ জানুয়ারি বীরের বেশে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান জীবদ্দশায় কিংবদন্তী হয়ে ওঠেন।

১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতির আসনে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি শহীদ হন। বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্য ছিল তার দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়ন ঘটানো। শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি একটা সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন, যে সোনায় বাংলার উপমা তিনি পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকে। ভালোবেসে বঙ্গবন্ধু সেই সোনার বাংলার স্বপ্ন থেকে দেশের জাতীয় সঙ্গীত নির্বাচন করেছিলেন।

বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী রাখা হবে না। নিরলস কাজ করে দেশে কৃষি বিপ্লব সাধন করুন' কথাটি বলেছেন ইতিহাসের মহানায়ক বাঙালীর রাখাল রাজা, বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, দারিদ্র বিমোচনসহ সব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। এর মধ্যে তিনি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন কৃষি ও শিল্পকে। কৃষি ও শিল্প বিপ্লব ঘটাতে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির পথপ্রদর্শক। দেশকে এগিয়ে নেয়র় অগ্রনায়ক। তিনি বাঙালি আধুনিক পরিচয়কে বহুমাত্রিক পূর্ণতা নিয়েছেন। তাঁর শোষণহীন সমাজ গঠনের স্বপ্নের জমিনের বড় অংশই জুড়ে ছিল বাংলাদেশের কৃষক। কৃষকদের চাওয়া-পাওয়াকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন। স্বাধীনতার পরই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরলস প্রচেষ্টায় এ দেশে সবুজ বিপ্লবের সূচনা হয়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষি ও কৃষকের অতিপ্রিয় একজন মানুষ, আপনজন। ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদের প্রথম সভায় নিলেন কৃষকদের জনা যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত । তাদের সমস্ত বকেয়া খাজনা ও সুদ তিনি মওকুফ করে দিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমি খাজনা চিরতরে মওকুফ করার ঘোষণা দিলেন। সীমাহীন বাঁধা উপেক্ষা করে জাতির পিতার নির্দেশে তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর সরকার পূর্ব জার্মানি থেকে বিমানে করে ৩৮,০০০ সেচ যন্ত্র এবং ফিলিপাইন মেকে আইআর ৮ জাতের ধানের উন্নত বীজ আমদানী করে বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে সাড়া ফেলেছিলেন। সে সময় তিনি কয়েক লক্ষ কৃষি ঋণের সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার, ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে খাস জমি বিতরণ এবং চাখীদের জন্য সহজ শর্তে কৃষি ঋণ দানের ব্যবস্থা করেছিলেন যা ছিল, সে সময়কার যুগান্তকারী সাহসী পলক্ষেপ। তিনি কৃষি বিপ্লবের লক্ষ্যে একটি যুগোপযোগী ভূমি সংস্কার কর্মসূচী যাতে নিয়েছিলেন। দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে দেশের স্বনামধন্য অর্থনীতিনিদদের নিয়ে গঠন করলেন প্রথম পরিকল্পনা কমিশন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি হলেন কমিশনের চেয়ারম্যান। সঠিক ও সময়োপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়নের তাগিদে তাঁর দূরদুষ্টিসম্পন্ন চিন্তা থেকে তিনি গঠন করলেন সেন্সাস কমিশন। কৃষি ও কৃষকদের ভালোবেসে তাদের প্রয়োজনের তাগিদে গঙ্গার শানি বন্টন সমস্যা নিয়ে ভারতের সাথে দীর্থ দেন- দরবার করে তিনি নায্য সমাধান করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৪ সালে মিসেস ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দিল্লীতে বৈঠক করে তিনি ফারাক্কা সমস্যার আশু সমাধানের জন্য জোর চাপ দেন। যার প্রেক্ষিতে সেদিন ভারত বাংলাদেশকে শুষ্ক মৌসুমে ৪৪,৫০০ কিউসেক পানি দেয়ার নিশ্চয়তাসহ চুক্তিতে সই করে ছিল এবং সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ন্যায্য পানি পেয়েছিল।

এ ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে এলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতির এই উজ্জ্বল  উপস্থিতি সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার চিত্তকে এক অপার আনন্দের বন্যায় ভরিয়ে দিয়েছিল। ঐ দিন সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য দানকালে তিনি দেশের কৃষি ব্যবস্থায় গতিময়তা সংস্কারের লক্ষ্যে কৃষিবিদদের পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধির ঐতিহাসিক ঘোষণা প্রদান করেন। এর ফলশ্রুতিতে কৃষিবিদগণ লাভ করেন সরকারি চাকুরীতে গৌরবের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গৃহীত এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপের ফলেই দেশের সার্বিক কৃষি উৎপাদনসহ কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যাপক গতিশীলতা সঞ্চারিত হয়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতির জনকের সেই ঐতিহাসিক পদচারণা, কৃষিকে নিয়ে তার জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য নিঃসন্দেহে কৃষি ও কৃষকদের প্রতি তা সীমাহীন ভালবাসারই বহিঃপ্রকাশ। বঙ্গবন্ধু সেদিন ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করেছিলেন তার ঐতিহাসিক অভিব্যক্তি, তিনি বলেছিলেন- এ দেশের ৯০ জন কৃষক গ্রামে বাস করে। আমাদের গ্রামের দিকে যেতে হবে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা শিক্ষিত হচ্ছেন আপনাদের সেদিকে বেশি নজর দিতে হবে। এখন ভুলে যান শহরমুখী রাজনীতির কথা। আমরা এখন গ্রামের দিকে যাচ্ছি, তখন আপনাদের দাম অনেক বেড়ে যাবে। শহরের ভদ্র লোকদের দেখে আপনাদের চিন্তার কোন কারণ নাই, কারণ আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতির দিকে যেতে হবে। কৃষককে বাঁচাতে হবে। উৎপাদন করতে হবে। তা না হলে বাংলাকে বাঁচাতে পারবেন না।

তিনি ডাক দিলেন, কৃষি উন্নয়নের জন্য তোমরা গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে পড়। বস্তুতঃ তিনি গ্রামকেই উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে দেখে কৃষকদের সংগঠিত করতে ছেয়েছিলেন তাঁর সবুজ বিপ্লবের কর্মসূচিতে। বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে সেদিন আরও বলেছিলেন 'খাদ্য শুধু- চাউল,আটা নয়, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ তরকারীও আছে-কুষিতে এ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রী বলেন, প্রোল্টি বলেন, সবদিকে নজর দিতে হবে। প্লানড্ ওয়েতে আমাদের কাজ করতে হবে।

যেভাবে  বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন, তাতে বিস্মিত হয়েছিল সারা বিশ্ব। তার ৭ই মার্চের ভাষণ যে শুনেছে, তারই শরীরে বয়ে গেছে বিদ্যুৎপ্রবাহ। কী ছিল সে ভাষণে?  কোনো অজ্ঞাত তথ্য নয়, কোনো অপ্রত্যাশিত ঘোষণা নয়, ভাষার কোনো কারুকার্য নয়, বলার কোনো পরিশীলিত ভঙ্গি নয়। তাতে ছিল এ দেশের সর্বশ্রেণির মানুষের প্রাণের কথা। মানুষের সঙ্গে এই আন্তরিকতার বন্ধন গড়ে উঠেছিল বলেই তা শত্রুদেশে বন্দি থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধে তার প্রেরণা ছিল সক্রিয়। স্বাধীনতা লাভের জন্য যেমন দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ছিল সবাই, তেমনি প্রবল আকাঙ্খা ছিল তার নেতৃত্বে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ে তোলার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন এ দেশের মানুষ মাটির মতই, বর্ষায় হয় নরম আর চৈত্রে হয় ওঠে দারুণ কঠিন। যার প্রমাণ মিলেছে একাওরের রণাঙ্গণের দিনগুলোতে। বঙ্গবন্ধুর যাদুকরী অনুপ্রেরণায় কি অসীম ভালোবাসা, মমতা ও ত্যাগ দিয়ে। এসব ঘরগুলি আমাদের বেঁধে রেখেছিল এক সুত্রে, এক জাতিতে, আবার অন্যদিকে বিদেশি হানাদারদের প্রতিহত ও বিতাড়িত করার জন্য কঠিন অবস্থান থেকে সংগ্রাম করেছে। তাই এ দেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে ঐতিহাসিকভাবে সচেতন ও সংগ্রামী বলা যায়।

এমন একজন নেতা এদেশে আর জন্মায়নি। তার মত করে বাংলাকে আর ভালোবাসেনি কেউ; কেউ দেশের মানুষকে তার মতো করে আগলে রাখেনি। হাজারও সালাম এ নেতার প্রতি। তাইতো ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উক্তিটি মনে পড়ে যায়, তিনি বলেছিলেন 'বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দক্ষিণ এশিয়া অন্যরকম হতো' - তিনি তার এক লেখায় উল্লেখ করেছেন 'আমি বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন থেকে অনুপ্রাণিত হই, বাঙালি হিসাবে তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি'। আসলে নিজের জাতিসত্ত্বা সম্পর্কে গর্ববোধ না থাকলে কোন জাতি বড় হতে পারে না। সেটাই বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে আমার প্রথম শিক্ষা।'

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ আমাদের মাঝে নেই। আছে তাঁর আদর্শ ও দিক নির্দেশনা। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে এই মূলমন্ত্রের প্রতি অবিচল থেকে বর্তমান সরকারের কৃষি উন্নয়নের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দেশের কৃষি উন্নয়নে বর্তমান সরকারের গৃহীত নীতি ও পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই দেশবাসীর মনে এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। একই ধারায় প্রণীত হয়েছে নতুন কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা নীতি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের মাধ্যমেই আমাদের দায়িত্ব হবে দেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে জাতির জনকের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। তাহলেই তার আত্মা শান্তি পাবে। এটাই হবে ইতিহাসের এ মহান নেতার প্রতি আমাদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন।

লেখক: উপাচার্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ