নব নব প্রযুক্তি ও সম্প্রসারণ সেবা খামারীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে নরসিংদী সদর প্রাণিসম্পদ দপ্তর

Category: ফার্ম টু ডাইনিং Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:প্রাণিসম্পদ হচ্ছে এ নরসীংদী অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম। আধুনিক ও কার্যকরী প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি গ্রহন করে এ অঞ্চলের খামারিরা স্বল্প পুঁজি,স্বল্প জমি ও অল্প বিনিয়োগ করে আত্মকর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন, আমিষের চাহিদা পূরণ ও নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। আর এনএটিপি-২ এর মাধ্যমে নরসিংদী সদর উপজেলা হতে প্রানিসম্পদ বিষয়ক নব নব প্রযুক্তি ও সম্প্রসারণ সেবা খামারীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

আজ ৩ মার্চ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, নরসিংদী সদর-এর আয়োজনে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারের উৎপাদনশীল বৃদ্ধি ও উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য বাজারমূল্য প্রাপ্তিতে প্রাণিসম্পদ বিষয়ক সফল প্রযুক্তি হস্তান্তর ও খামারী সমাবেশে আমন্ত্রি অতিথবৃন্দের বক্তব্যে এমন অনুভূতিই ফুটে উঠল। সদর উপজেলার চরদীঘলদি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত সকাল ১১:০০ টা থেকে দিন ব্যাপি সিআইজি-নন সিআইজি সমাবেশে পঞ্চাশ জনের অধিক খামারী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

নরসিংদী সদর উপজেলার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা: মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে খামারী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা: মো: হাবিবুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ অফিসার ডা: তাহমিনা খানম (তুলি)। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অত্র দপ্তরের ফিল্ড এসিস্ট্যান্ট আয়েশা মরিয়ম উর্মি, ফিল্ড এসিস্ট্যান্ট মো: সাগর, এলএসপি মো: আক্তার হোসেন, সীল কর্মী আ: করিম প্রমুখ।

খামারী সমাবেশে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি আগত খামারীদের উদ্দেশ্যে উন্নত জাতের গাভীপালন প্রযুক্তি, ব্রাহমা জাতের ষাঁড় বাছুর পালন প্রযুক্তি, নিলি-রাভি মহিষ পালন প্রযুক্তি, গয়াল ও গারল পালন প্রযুক্তি, ব্রয়লার, লেয়ার ও কোয়েল পালন প্রযুক্তি, থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা অধিক উৎপাদনশীল ও পুষ্টিমানসমৃদ্ধ উন্নত পাকচং-০১ জাতের ঘাস চাষাবাদ প্রযুক্তি, ইউএমএস প্রযুক্তি, সাইলেজ প্রযুক্তি, এলএসডি ও পিপিআর নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি, এফএমডি ও ম্যাসটাইটিস নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

প্রধান অতিথি জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা: মো: হাবিবুর রহমান খান বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর গত ১২ বছরে দুধ ও ডিমের উৎপাদন বেড়েছে আড়াই গুন ও মাংসের উৎপাদন বেড়েছে পাঁচগুন। নরসিংদী জেলায় দুধ, ডিম ও মাংসের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় উদৃত্ত্ব রয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য তিনি খামারিদের অনুরোধ করেন।



প্রাণিসম্পদ  সম্প্রসারণ অফিসার ডা. তাহমিনা খানম (তুলি) বলেন, প্রতিদিন যাতে একজন মানুষ সকালে এক কাপ দুধ, বিকালে একটি ডিম এবং প্রতিদিন ১২০ গ্রাম করে মাংস পায়, সে লক্ষ্যে  এনএটিপি-২ কাজ করছে। সকলের জন্য নিরাপদ, পর্যাপ্ত  ও মানসম্মত প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যেও এনএটিপি-২ এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি খামারীদেরকে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও উৎপাদিত পণ্যের নায্য বাজারজাতকরণের জন্য প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রযুক্তি ব্যবহারের  অনুরোধ জানান।

চরদীঘলদি ইউনিয়নের একজন সফল খামারী মোসাঃ মর্জিনা বেগম জানান, প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রযুক্তির উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি আজ স্বাবলম্বী। দোয়ানী গাভীপালন সিআইজি সমিতির সভাপতি মো: আক্তার হোসেন বলেন, এক সময় তিনি বেকার ছিলেন। তার কোন ঠিকানা ছিলো না। তিনি এক সময় স্বপ্ন দেখতেন একজন সফল উদ্দ্যোক্তা হওয়ার। প্রাণিসম্পদ বিষয়ক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে আজ তিনি অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল  ও স্বাবলম্বী।  এজন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান। পাশাপাশি তিনি নরসিংদী সদরের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

নব নব প্রযুক্তি ও সম্প্রসারণ সেবা খামারীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিদে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে নরসিংদী সদর প্রানিসম্পদ অফিস। তাদের মতো দেশের সকল প্রান্তে কর্মরত প্রানিসম্পদ কর্মকর্তারা প্রান্তিক পর্যায়ের খামারীদের সেবা দিয়ে যাবেন এমনটাই আমা করেন সংশ্লিস্ট সকলে। তারা নরসিংদী সদরে কর্মরত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।