মুকুলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছ-বর্ণিল সাজে সেজেছে আমের নতুন রাজ্য নওগাঁ

Category: ফার্ম টু ডাইনিং Written by agrilife24

কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ:নওগাঁ যেন আমের রাজ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে। যেদিকে তাকানো যায় গাছে গাছে এখন শুধু দৃশ্যমান সোনালী মুকুলের আভা। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়ার উপক্রম প্রতিটি গাছ। মৌমাছিরাও আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই সুমধুর কুহুতানে মাতাল করতে আবারও ফিরে এসেছে বাংলার বুক মাতাল করতে ঋতুরাজ বসন্ত। রঙিন বন ফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে তেমনি নতুন সাজে যেন সেজেছে জেলার ১১টি উপজেলার ৯৯টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভার আম বাগানগুলো।

আমের মুকুলে ভরপুর আর ঘ্রাণে নওগাঁর সর্বত্র জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা। শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানগুলো প্রায় ৭০ শতাংশ গাছেই এসেছে মুকুল। বাগান মালিক, কৃষিকর্মকর্তা ও আম চাষিরা আশা করছেন বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে জেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে। বর্তমানে আম চাষি ও বাগান মালিকরা বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আশার আগে থেকেই গাছের পরিচচর্যা করে আসছেন তারা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাঁধার সময় কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয়। এ জেলা ফজলি, খিড়সা, মোহনা, রাজভোগ, আম্রপালী, বারী-৪, গোপালভোগসহ অন্যান্য জাতের আম চাষের উপযুক্ত হওয়ায় চাষীরা নিজ উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করে আমের বাগান করেছেন।

জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমের চাষ হয় সাপাহার, পোরশা ও পত্নীতলা উপজেলায়। পত্নীতলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুর এলাহী জানান, পুরাপুরিভাবে এখনো সবগাছে মুকুল আসেনি। আর সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই সকল গাছেই মুকুল আসবে। ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ কম থাকায় এবার কাঙ্খিত ফলনের আশা করছেন চাষিরা। আর ধীরে ধীরে জেলা জুড়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে আমের বাগান। উৎপাদিত আম মানসম্মত হওয়ায় চাহিদাও বাড়বে অনেক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ জানান, এবার আগাম মুকুল ফুটেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মুকুলগুলো নষ্ট হবার সম্ভাবনা নেই। আমের মুকুলের পরিচর্যায় উকুন নাশক এভোমেট্রিন ও ছত্রাকনাশক মেনকোজেব বালাইনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত মৌসুমে আমের বাজার ভালো থাকায় লাভবান হয়েছিলেন চাষিরা। গত বছরের চেয়ে এ বছর আম বাগান আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জেলার বিরাজমান আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় আমের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে।