ঢাকায় "পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই সোনার মানুষ হই " শীর্ষক পাঠ ও রচনা প্রতিযোগিতার সনদ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

রাজধানী প্রতিনিধি:আমাদের সকল উন্নতি, সকল সাধনা, সকল জ্ঞাণ সবকিছু ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমরা আমাদের মা'কে ভালোবাসতে না পারি বা মা'র প্রতি অনাদর করি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলেছেন সংস্কৃতির শুদ্ধ মানুষ, জনপ্রিয় নাট্যব্যক্তিত্ব, বাংলা একাডেমি পুরষ্কারজয়ী খ্যাতিমান লেখক ড. রতন সিদ্দিকি।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে  সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্টপোষকতায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের আয়োজনে তাহমিনা- ইকবাল পাবলিক লাইব্রেরির বাস্তবায়নে "পড়ি বঙ্গবন্ধুর বই সোনার মানুষ হই " শীর্ষক পাঠ ও রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সনদ ও পুরস্কার বিতরণি অনুষ্ঠান বুধবার (১৩ জানুয়ারি ২০২১) আব্দুল্লাহ মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়ের মিলনায়তন,বাউনিয়া ঢাকায়  অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন আমাদের এক মা হচ্ছে জননী আর এক মা হচ্ছে দেশ-জন্মভূমি। বঙ্গবন্ধুর বই এ  এই দুই মা'এর কথাই বারবার লিখা আছে।বঙ্গবন্ধুর  জীবনের সকল দিকে তাকালে দেখবে তিনি এই দুই মায়ের প্রতি অসম্ভব ভালোবাসা সম্মান ও বিশ্বাস দেখিয়েছেন তিনি জননী ও জন্মভূমির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর  বই পড়ার ভেতর দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জানবো,মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানবো,বঙ্গবন্ধুর জীবনের আচার আচরণ জানার ভেতর দিয়ে দেশ মা ও মা জননীর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসা নিবেদন করবো।।

জনপ্রিয় নাট্যব্যক্তিত্ব, বাংলা একাডেমি পুরষ্কারজয়ী খ্যাতিমান লেখক,সাহিত্যিক ও তাহমিনা- ইকবাল পাবলিক লাইব্রেরির সভাপতি  ড. রতন সিদ্দিকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত  অতিথি  অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু ও  সত্বধিকারি হাতিল ফার্নিচার, নায়লা নিপা।

তাহমিনা- ইকবাল পাবলিক লাইব্রেরি এর সদস্য আব্দুল মোমিন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আব্দুল্লা মেমোরিয়াল হাই স্কুল  প্রধান শিক্ষক ও পাঠাগারের  মূখ্য সংগঠক জনাব সফিউল গনি।



সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু বলেন,বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির পথপ্রদর্শক। দেশকে এগিয়ে নেয়ার অগ্রনায়ক। তিনি বাঙালির আধুনিক পরিচয়কে বহুমাত্রিক পূর্ণতা দিয়েছেন। তাঁর শোষণহীন সমাজ গঠণের স্বপ্নের জমিনের বড় অংশই জুড়ে ছিল বাংলাদেশের কৃষক। কৃষকদের চাওয়া-পাওয়াকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন। স্বাধীনতার পরপরই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিরলস প্রচেষ্টায় এ দেশে সবুজ  বিপ্লবের সূচনা হয় । বঙ্গবন্ধু ছিলেন  কৃষি ও কৃষকের অতিপ্রিয় একজন মানুষ, আপনজন। ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদের প্রথম সভায় নিলেন কৃষকদের জন্য যুগান্তকারী এক সিদ্ধান্ত। তাদের সমস্ত বকেয়া খাজনা ও সূদ তিনি মওকুফ করে দিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা  চিরতরে মওকুফ করার ঘোষণা দিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মাননীয় প্রদানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা আজ ধান উৎপাদনে বিশ্বে ৩য় স্থান অর্জনকারী দেশ। মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল যে, বাঙালি জাতি জ্ঞানে-বিজ্ঞানে প্রজ্ঞায়, শক্তি-সাহসে পূর্ণাঙ্গ জাতি হিসেবে পৃথিবীর বুকে  মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তিনি সবসময়  দেশ ও জাতির  কল্যাণ কামনা করেছেন । তোমাদেরকে সোনার মানুষ হতে হলে তার আদর্শকে জীবনদর্শণকে অনুসরণ করতে হবে।

তিনি ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উক্তিটি শিক্ষার্থীদের মনে করিয়ে দেন তিনি বলে ছিলেন,“বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দক্ষিণ এশিয়া অন্যরকম হতো- তিনি তাঁর এক লেখায় উল্লেখ করেছেন “ আমি বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শণ থেকে অনুপ্রাণিত হই,বাঙালি হিসাবে তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। আসলে নিজের জাতিসত্তা সম্পর্কে গর্ববোধ না থাকলে কোন জাতি বড় হতে পারে না। সেটাই বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে আমার প্রথম শিক্ষা”

অনুষ্ঠানে পুরষ্কার বিজয়ী শিক্ষার্থী কাউসার হামিদ তার অভিব্যাক্তি এভাবেই প্রকাশ করে-
"একটি সুখী সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। যে দেশে থাকবে না হিংসা, শুধু থাকবে মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা৷  
শ্রদ্ধা জানাচ্ছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে "

রাকিবুল হাসান বলেছে, বড় অর্জনগুলো মাঝে এই ছোট ছোট পাওয়া গুলো বৃহৎ পরিসরে ভাবতে অনুপ্রাণিত করে। মহামারীর এই অশান্ত সময়ে গড়ে উঠা একটা নতুন অভ্যাসের প্রথম প্রাপ্তি এটিই।

অনুষ্ঠানে শিক্ষক শিক্ষার্থি অভিভাবকগণ অংশ নেন।