চাল আমদানিতে অসুবিধাসমূহ দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে- খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:সীমান্ত দিয়ে চালের ট্রাকের প্রবেশে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া এবং চাল আমদানিতে অন্যান্য যেসকল অসুবিধা আছে তা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় অনলাইন জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সভায় অনলাইন জুম অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: এনামুর রহমান,  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ এবং খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিট এর মহাপরিচালক। সভায় সভাপতিত্ব করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং সঞ্চালনা করেন খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।

ভোমরা, হিলি, বুড়িমারী, বাংলাবান্ধা, শেওলা, সোনা মসজিদসহ যেসকল স্থল বন্দর দিয়ে চাল দেশে প্রবেশ করছে; সে সকল বন্দরে শত শত চালের ট্রাক অপেক্ষমান রয়েছে বলে সভায় জানানো হয়। অপেক্ষমান এসব চালের ট্রাক যাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করতে পারে এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের অনুরোধ করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
দেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে আতপ চালের প্রচুর চাহিদা রয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে বেসরকারি পর্যায়ে আতপ চাল আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে নন-বাসমতি মোটা আতপ চাল আমদানির অনুমতি প্রদান করা যায় কিনা তা বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানান তিনি। সভায় উপস্থিত অর্থমন্ত্রী নন-বাসমতি মোটা আতপ চাল আমদানির অনুমতিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সকল বিষয়ে একত্রে প্রস্তাব পাঠাতে বলেন। এছাড়াও বর্তমান চালের মজুদ পরিস্থিতি, অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে সংগ্রহের প্রবণতা, চালের আমদানির পরিমাণ, চালের বাজার মূল্য, ওএমএস খাতে বরাদ্দ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এছাড়াও আমরা ১৩টি জেলার (খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, যশোর, জয়পুরহাট, সাতক্ষীরা, সিলেট, দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, চট্টগ্রাম ও ঢাকা) জেলা প্রশাসক ও আমদানিকারকদের নিয়ে একটি মিটিং করেছি। এলসি খোলার সর্বশেষ সময়সীমা ১৫ফেব্রুয়ারির পরে আর কেউ এলসি খুলতে পারবেন না বলেও উক্ত সভায় আমদানিকারকদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে যারা ১৫ তারিখের মধ্যে এলসি খুলতে পারবেন না তারা তাদের বরাদ্দ প্রত্যাহার করুন। যারা ১৫তারিখের মধ্যে এলসি খুলতে পারবে না তাদের বরাদ্দ বাতিল করে আমরা নতুন করে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে আমদানির অনুমতি দিবো।

উল্লেখ্য, সর্বপ্রথম বরাদ্দ পত্র ইস্যুর ৭দিনের মধ্যে এল.সি খুলে এ সংক্রান্ত তথ্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে বলা হয়েছিল। ৫ হাজার মেট্রিক টন বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীগণকে এল.সি খোলার ১০ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং সর্বমোট ২০ দিনের মধ্যে সমুদয় চাল এবং ১০-১৫ হাজার মেট্রিক টন বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীগণকে এল.সি খোলার ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং সর্বমোট ৩০ দিনের মধ্যে সমুদয় চাল বাংলাদেশে বাজারজাত করতে হবে মর্মে খাদ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এলসি খোলার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১জানুয়ারি ২০২১ তারিখ পর্যন্ত করা হয়। পরে আবারও এলসি খোলার সময়সীমা ১৫ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।

এপর্যন্ত ৩২০ প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে মোট ১০ লক্ষ ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আমদানিকৃত চাল দেশে আসতে শুরু করেছে।